শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক স্বর্ণা দাস ও শ্রী জয়ন্ত নামে দুই বাংলাদেশীকে হত্যা করা এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনী হুমকি প্রদানের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময়, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘মোদির দুই গালে, জুতা মারো, তালে তালে’, ‘ফেলানী থেকে শ্রী জয়ন্ত, বাংলাদেশ আর কতকাল থাকবে ঘুমন্ত’, ‘সীমান্তে আর কত বাংলাদেশি মারবে ভারত?’, ‘গুলি কি চিনে কে হিন্দু কে মুসলমান?’, ‘বাংলাদেশকে হুমকি দিলে সাতবোন (সেভেন সিস্টার) টিকবে?’, ‘স্বর্ণা আমার বোন জয়ন্ত আমার ভাই, ভাই-বোনকে মারলো কেন? মোদির কাছে জবাব চাই’ ও ‘পাক-চিন সিমান্তে কাপে থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেন শিশু মারো?’ সহ নানা প্রতিবাদী লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম তাওফীকুর রহমান বলেন, রাজনাথ সিং ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনের সাথে বাংলাদেশকে তুলনা করে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। এটি জঘন্য এবং নিন্দনীয়। যা আন্তর্জাতিক আইন খেলারই একটা আচারণ। তার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশর স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রকে কটাক্ষ করছেন। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে রাজনাথ সিং এর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং ঘৃণা জানাই। আমরা রাজনাথকে বলতে চাই, আপনার এই অসাধু উচ্চারণ বন্ধ করুন। বাংলাদেশ মানে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ। তাদের ৩৬ কোটি হাত আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, আজকে ২৪ এ এসে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের দেশের ছাত্ররা নিজেদের বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে। আজকে আমরা দেখছি আমাদের বর্ডারে নিরিহ মানুষের কিলিং হচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের এই হত্যার বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে আমি মনে করি এটা যথেষ্ট নয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আরও তীব্রভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, আমাদের এতোদিন বুঝানো হয়েছিল তারা (ভারত) বন্ধু রাষ্ট্র। তাদেরকে আমরা হাজার হাজার টন ইলিশ পাঠাবো, আর তারা উপহারস্বরুপ আমাদেরকে আবরার ফাহাদ উপহার দিবে। তারই পেক্ষিতে আমাদের স্বর্না দাস ও জয়ন্ত কে উপহার দিয়েছে। ভারত হোক বা অন্য দেশ হোক, ব্যক্তিকেন্দ্রিক বন্ধুত্ব আমরা চাই না। হাসিনা টু মোদি, বন্ধুত্ব আমরা চাই না। বন্ধুত্ব হোক বাংলাদেশ টু ভারত, বাংলাদেশ টু চীন, বাংলাদেশ টু নেপাল। যদি ব্যক্তিকেন্দ্রিক বন্ধুত্ব থাকে, তাহলে সেটা তাদের বাসায় গিয়ে করো। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এ ধরনের বন্ধুত্ব আমরা মেনে নেবো না। স্বাধীনতার পরবর্তী স্বর্ণা দাস ও শ্রী জয়ন্ত কে হত্যা করা হলো, যারা সংখ্যালঘু। বাংলাদেশ ও ভারতের সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্টদের নিয়ে যারা কথা বলেন, তারা এখন কোথায়?
এসময় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে স্বর্ণা দাস নামে এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আবারও বিএসএফের গুলিতে নিহত হন কিশোর শ্রী জয়ন্ত।