বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে শুধু সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এবং নির্মম শারীরিক নির্যাতনের পর প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০৪ জন বাংলাদেশি। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৩১৬ জন। এ ছাড়া অপহরণের শিকার হয়েছেন অন্তত ২০৯ জন বাংলাদেশি। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এসব হত্যাকান্ড সংঘটিত হলেও ভারতকে এ ব্যাপাওে জবাবদিহি করা যায় নি। ঘটনার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফ কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। কিন্তু পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয় না। সীমান্তে হত্যা সংঘটিত হয়েই চলে। দেশের মানুষ হত্যার ঘটনায় যতটা সরব ভ’মিকা পালন করতে তুলনায় সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যায় না।
২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মধ্যে শীর্ষ পযায়ের বৈঠক হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানানো হলে ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে তাঁর সরকার। কিন্তু ওই প্রতিশ্রুতি পর্যন্তই-পরিস্থিতির কোনো সুরাহা হয়নি। এছাড়াও বিজিবি ও বিএসএফ-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একাধিক বৈঠকেও সীমান্ত হত্যার বিষয়টি বিজিবির পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে। সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ গুরুত্বরোপ করা হলেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বর্ডার ভায়োলেন্স’ নিয়ে শক্ত অবস্থান না থাকায় সীমান্ত নিয়ে পৃথক আইন থাকার পরও এসব অপ্রয়োজনীয় হত্যাকান্ড একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ ও ভারতের দায়িত্বশীল আচরণ ছাড়া এ সমস্যা সমাধানের বিকল্প নেই।
একই সাথে বিজিবিকে সীমান্তে নজরদারি ও গোয়েন্দা সক্ষমতা বাড়াতে হবে, যাতে অবৈধ সীমান্ত কার্যকলাপ ও পাচারকারীদের সঙ্গে সীমান্তরক্ষীদের অবৈধ লেনদেন সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন করা যায়। এতে কাঁটাতারের বেড়া কাটা, গরু পাচার ও অবৈধ পারাপার বন্ধ করা সহজ হবে।