শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
চারঘাট প্রতিনিধি
রাজশাহীর চারঘাটে অভিনব কায়দায় মাদকের রমরমা বাণিজ্য চলছে। সীমান্তবর্তী উপজেলার পদ্মা নদীতে মাছ ধরার ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে সহজে মাদক ঢুকছে এ উপজেলায়। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। গত কয়েক মাসে সীমান্তবর্তী উপজেলা চারঘাটে উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদকের চোরাচালান।
জানা যায়, এই উপজেলার নদী তীরবর্তী এলকাগুলোর পাড়ায় পাড়ায় নির্বিঘ্নে বিক্রি হচ্ছে ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন, চারঘাট পৌরসভা ও চারঘাট ইউনিয়নের প্রায় ১৮ কিমি এলাকা জুড়ে নদী ভিত্তিক ভারত সীমানা। প্রায় প্রতিদিন এই উন্মুক্ত সীমানার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এসকল মাদক দেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। ভারত থেকে এসকল মাদকদ্রব্য নিয়ে এসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জড়ো করা হয়। পরে এসব মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে দরিদ্র নারী ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। স্থানীয়রা বলছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও একশ্রেণির দালালরা গোপনে মাদক বিক্রি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীরা অর্থের বিনিময়ে ডিঙ্গি নৌকা ব্যবহারকারী জেলেদের ব্যবহার করে ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক নিয়ে আসে। এসকল মাদক ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসার জন্য গ্রামের ছোট ছোট টং দোকান ব্যবহার করে। এছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মাদক সরবরাহে একশ্রেণির ছদ্মবেশি ছাত্রদের ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় ব্যাগের মাধ্যমে মাদক বহন করছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। ফলে মাদক সহজলভ্য হওয়ায় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাওথা, পিরোজপুর ডালিপাড়া, গোপালপুর, মোক্তারপুর, গৌরশহড়পুর, ইউসুফপুর, টাঙ্গন, শলুয়ার হলিাদাগাছী স্টেশন, নন্দনগাছী স্টেশন, পুঠিমারী এলাকা মাদক স্পট হিসেবে পরিচিত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে এক শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী গডফাদারররা হয়ে উঠছেন।
চারঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর বলেন, মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি, মডেল থানা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন বোর্ড ও নৌ-পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। নদীপথে টহল জোড়দার করে মাদক চোরাচালান রোধ করার চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেক বলেন, ৫ আগস্ট এরপর পুলিশ বাহিনীতে একটু ছন্দপতন হয়েছিল কথাটি সঠিক। আর এই সুযোগে কিছু মাদক ব্যবসায়ী সুযোগ নিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তবে পুলিশ এখন আগের চেয়ে অনেক সক্রিয়। যার প্রমাণ কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণের ফেন্সিডিল ও গাজা আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। মাদকের সঙ্গে কোন আপোষ নেই।
মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরোটলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, গডফাদার সিন্ডিকেট হোক আর যেই হোক মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।