সোনার দেশ ডেক্স :সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাতে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর রাতেই বিএনপির ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলায় স্বতন্ত্র থেকে সম্পাদক প্রার্থী অ্যাড. নাহিদ সুলতানা যুথি, বিএনপির প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকেও আসামি করা হয়েছে। যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, অ্যাড. জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ (৫৫), অ্যাড. শাকিলা রৌশন, অ্যাড. কাজী বশির আহম্মেদ, ব্যারিস্টার উসমান, অ্যাড. আরিফ, অ্যাড. সুমন, অ্যাড. তুষার, রবিউল, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), অ্যাড. তরিকুল, অ্যাড. সোহাগ, সাইদুর রহমান জুয়েল (৪০), অলিউর, যুবলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন ও আসলাম রাইয়ান । এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন ৩০-৪০ জন।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ১নং আসামির নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট বার সমিতির নিচতলার শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তন রুমের দরজা ৩নং আসামি ১, ২, ও ৪নং আসামির পরামর্শক্রমে সুকৌশলে ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অডিটরিয়ামের দরজা খুলে দিলে অস্ত্র হাতে জোরপূর্বক বে-আইনি অনাধিকার প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফসহ নির্বাচন সাব-কমিটির অন্যাদেরও গালাগালি করে। আসামিদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এতে তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন।
আরও বলা হয়েছে, আসামিরা তার সঙ্গীয় ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকেও মারপিট করে গুরুতর আহত করে। ১নং আসামি অ্যাড. রিনা বেগমকে চড়থাপ্পড় ও হুমকি দেয় এবং ১১নং আসামি গলায় চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে। অন্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা অডিটরিয়ামের ভেতরে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর ও অরাজকতা সৃষ্টি করে।
এর ফলে নির্বাচনি দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনি অন্য কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে ভন্ডুল হয়ে যায় এবং একপর্যায়ে সব আসমিসহ ১নম্বর আসামি নিজে অস্ত্রের মুখে নির্বাচন সাবকমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল খায়েরকে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য বাধ্য করে। নির্বাচন সাব-কমিটির সব সদস্য জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ভোট গণনার কাজ না করেই চলে যেতে বাধ্য হন। এসময় তার ১৫ হাজার টাকাও ১২নং আসামি নিয়ে যায়। নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ আসামিরা সম্পন্ন হতে না দিয়ে ১নং আসামিকে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে তার নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে দু’দিনে ৭ হাজার ৮৮৩ আইনজীবীর মধ্যে ৫ হাজার ৩১৯ আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে ইউনুছ আলী আকন্দ এবং সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান নির্বাচন করছেন। সম্পাদক পদে সাদা ও নীল প্যানেলের বাইরে অ্যাড. নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাড. সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন।