সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
গুরুদাসপুর প্রতিনিধি
এক বছর আগে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ হলেও সেতুটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয় নি। ফলে সেতুটি কাজে আসছে না। উপরন্তু বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের ডেলুগাড়ী নালার ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বিয়াঘাট হতে দূর্গাপুর পর্যন্ত ডেলুগাড়ী জোলার ওপর আবদুল হামিদের জমির কাছে ৩৪ ফুট দীর্ঘ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এজন্য ২৭ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৬ দশমিক ৫৯ টাকা ব্যয় হয়। নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গোলাপ ট্রেডার্স ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। কিন্তু সংযোগ সড়কের কাজ না করেই সমূদয় টাকা উত্তোলন করেন।
বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু ইউনুস জানান, ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন গ্রাম সাবগাড়ী, যোগেন্দ্রনগর, বিলহরিবাড়ি, হরদমা ও জ্ঞানদানগরে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই বিলের মাঝের নালার ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকার কারণে মানুষ কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছে না।
এলাকাবাসী জানান, সেতুটি নির্মাণের কারণে ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর উভয় পাশে এসে নতুন করে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া বিকল্প সড়ক তৈরি না হওয়ায় মাঠের ভেতর কাদাজল মাড়িয়ে চলতে হচ্ছে। দুভোর্গের কথা বিবেচনা করে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মানের দাবি জানান তারা।
গত শুক্রবার শেষ বিকালে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুটির চরাঞ্চলের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত পাকা করা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত ভ্যান এসে থামছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় এসব যানবাহনগুলো পার হয়ে গন্তব্যে যেতে পারছে না। তবে সেতুটির উত্তর-পূর্বে রয়েছে কাঁচা সড়ক। পায়ে হেঁটে সেতুর পশ্চিমে এসে ভ্যানে উঠছেন।
বিয়াঘাট ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক জানালেন, সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা হলে চরাঞ্চলের ইউনিয়ন কার্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। মানুষের দুভোর্গ অনেক কমে আসবে। তাছাড়া নালার ওপর ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় ব্রিজের উত্তর-পুর্ব অংশের কাঁচা সড়কটি পাকা করণের জন্য সাংসদ আবদুল কুদ্দুসের সহায়তায় অগ্রাধিকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্রিজের সংযোগ সড়কের কারণে সড়ক পাকাকরণের কাজ থেমে রয়েছে।
ঠিকাদার গোলাপ দাবি করেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই বর্ষা শুরু হওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা যায় নি। সুবিধামতো সময়ে কাজ শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. গোলাম রাব্বানী বলেন, ঠিকাদার সমুদয় বিল উত্তোলন করলেও জামানতের প্রায় আড়াই লাখ টাকা আটকে দেয়া হয়েছে। সংযোগ সড়ক নির্মাণের পর তা ছাড় করা হবে।