সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার ‘বামপন্থী’দের লেবার পার্টি নিয়ে উচ্ছ্বাস অকারণ! ব্রিটেনে কেবল বদলেছে পুঁজিবাদের পাহারাদার

আপডেট: জুলাই ১২, ২০২৪, ৫:০২ অপরাহ্ণ


গৌতম রায়:


ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন হল। এই নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে প্রবল উৎসাহ ছিল। কে জিতবে? আগের সরকার ক্ষমতা বজায় রাখতে পারবে নাকি সেখানে কোনও ‘পরিবর্তন’ আসবে, এ নিয়ে গোটা বিশ্বই ছিল প্রবল আগ্রহান্বিত। অবশেষে ব্রিটেনের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হতেই দেখা গেল এক চমকপ্রদ ঘটনা।

দেখা যাচ্ছে, এই শতাব্দীর শোচনীয় পরাজয়ের মুখে পড়েছে কনজারভেটিভ পার্টি টোরি। প্রায় ১৪ বছর ব্রিটেনে এই টোরি পার্টি ক্ষমতাসীন ছিল। এই দলটির প্রতিষ্ঠা ১৮৩৪ সালে। সেই সময়কাল থেকে সদ্য পরাজয়ের আগে পর্যন্ত, ব্রিটেনের সংসদে এই দলটির যে প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেই সমস্ত ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে এ বারে টোরিদের নির্বাচনী ফল।

এত কম সংখ্যক সাংসদ এই দলের গত প্রায় ১০০ বছরে আগে কখনও ঘটেনি।
দুই তৃতীয়াংশ সাংসদের এ ভাবে হঠাৎ করে হেরে যাওয়া, ব্রিটেনের রাজনীতির ইতিহাসে আদৌ কোনও মামুলি ব্যাপার নয়। গতবারে টোরিদের সংসদে আসন সংখ্যা ছিল ২৪৪। আর এবার সেটা নেমে এসেছে মাত্র ১২১–এ। এ থেকে বুঝতে পারা যাচ্ছে, ব্রিটেনের রাজনীতিতে বিগত সময়কালে কী ভাবে এই কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা কমেছে

। ব্রিটিশ সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সে, লেবার পার্টি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন কিয়ের স্টার্মার, সেই দলের আসন সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এবার তাদের আসন সংখ্যা হয়েছে ৪১২। ব্রিটেনের সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের মোট আসন সংখ্যা ৬৫০। লেবার পার্টি, সরকার তৈরির ম্যাজিক সংখ্যা থেকেও ৮৬টি আসন বেশি পেয়েছে।

ব্রিটেনের এ বারের ভোটে যে ফলাফল উঠে এসেছে তাতে অনেকের কাছেই প্রসঙ্গটি ১৯৯৭ সালের মতো বলে মনে হচ্ছে। সে বারের ভোটে টোরি প্রধানমন্ত্রী জন মেজর ক্ষমতাচ্যুত হন। প্রধানমন্ত্রীর পদ দখল করেন লেবার পার্টির নেতা টনি ব্লেয়ার। অনেকেই ঋষি সুনকের এই পরাজয় আর লেবার পার্টির স্টামার্রের কাছে এ ভাবে পর্যুদুস্ত হওয়াকে সেই ‘৯৭ সালের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন।

কিন্তু এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, ব্রিটেনের শাসন ক্ষমতায় লেবার পার্টি এসেছে ঠিক কথাই, তাহলে ভোটের ফলাফলের নিরিখে, এই লেবার পার্টিকে কি খুব একটা জনপ্রিয় বলে অভিহিত করতে পারা যায়? লেবার পার্টি পেয়েছে মাত্র ৩৩.৮% মানুষের জনসমর্থন। হাউস অফ কমন্সে তাদের জুটেছে ৬৫ শতাংশ আসন।

২০১৭ সালে যে নির্বাচন হয় সেখানে, লেবার পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন জেরেমি করবিন। তিনি পেয়েছিলেন ৪০ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালে ব্রিটেনে যে নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে লেবার পার্টি হেরে যায়। আর সেই হারের পিছনে করবিনের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়াকে অনেকেই দায়ী করেছিলেন। সেই বছর ব্রিটেনে ভোটদানের হার ছিল ৬৭ শতাংশ।

আর এই বছরে (২৪) ভোটদানের হার হল ৬০ শতাংশ। ভোটদানের এই হার ব্রিটেনের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটা রেকর্ড। ২০১৯ সালের ভোটে করবিনের পক্ষে সমর্থন ছিল ৩২.২ শতাংশ। এ বছরের থেকে প্রায় দুই শতাংশ কম।

এ বছরের ভোটে লেবার পার্টি ভোট বাড়াতে পেরেছে মাত্র ১.৬ শতাংশ। কিন্তু আসন সংখ্যা নিরিখে তারা ২১১–টি আসন পেয়েছে। করবিন নিজে তাঁর দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নর্থ ইসলিংটন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পঞ্চাশ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন।

হারিয়েছেন লেবার পার্টি উপর মহল থেকে চাপিয়ে দেওয়া প্রার্থীকে। মনে রাখা দরকার ‘৮২ সালে ব্রিটেনের নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে প্রথম জিতেছিলেন করবিন। সেই থেকে একটানা তিনি জিতে চলেছেন। একবারের জন্যও হেরে যাননি। এ বারের ভোটে ৭২৪৭ ভোটে তিনি হারিয়েছেন লেবার পার্টির প্রার্থী প্রফুল নারগুন্ডকে। এই প্রফুল নারগুন্ডে কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত। করবিন ২৪,১২০টি ভোট আর লেবার পার্টির প্রার্থী পেয়েছেন ১৬,৮৭৩–টি ভোট।

করবিনের এই জয়টি কিন্তু কেবলমাত্র ব্রিটেনের রাজনীতিতে নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একটা প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কারবিন এই জয়ে স্টার্মারের জন্য একটা বড় রকমের সতর্কবার্তা তৈরি হল।

অপরপক্ষে, যাঁরা বামপন্থী, তাঁদের কাছেও কিন্তু করবিনের এই জয়টা আগামী দিনের জন্য একটা বড় শিক্ষা হিসেবেই থেকে যাবে। লেবার পার্টির যে সাফল্য ব্রিটেন এবার আমরা দেখতে পেলাম, সেটা মূলত টোরি বিরোধী ভোট থেকেই অর্জিত হয়েছে। তাদের দলের ইতিহাসে সবথেকে কম, ২৪ শতাংশ সমর্থন নিয়ে তাদের এখন আসন মাত্র ১৮ শতাংশ। লিজ ট্রস, যিনি ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, তিনি–সহ ১১ জন মন্ত্রী নিজের নিজের আসনে হেরেছেন।

লেবার পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছেন প্যালিস্টানপন্থী প্রার্থীরা। এরকম চারজন প্যালেস্টাইনপন্থী প্রার্থীর জেতা ব্রিটেনের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটা বড় রকমের ইঙ্গিতবাহী ঘটনাই শুধু নয়। এই চারজন প্রার্থীর জয়, যেটা আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও প্যালেস্টাইনের পক্ষে, অর্থাৎ, সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা উৎসারিত হবার ক্ষেত্রে একটা বড় রকমের ঘটনা।

স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ব্রিটেনের এ বারের নির্বাচনে একেবারে লেজে–গোবরে হয়ে গিয়েছে। এস এন পি–র এই বিপর্যয় লেবার পার্টির ক্ষেত্রে সাফল্যের জায়গাটা তৈরি করবার একটা দরজা খুলে দিয়েছে। স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টির পক্ষে ভোট বেড়েছে ১৭ শতাংশ। আর স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির ভোট সেখানে হয়েছে ১৫ শতাংশ। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টির কাছে প্রায় ৪০টি আসন হারিয়েছে। আগে, অর্থাৎ, সুনকের সময় এই স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির আসন সংখ্যা ছিল ৪৮, সেখান থেকে নেমে এ বার হয়েছে মাত্র নয়।

নির্বাচনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল রিফর্ম ইউকের প্রধান নাইজেল ফারাজের জয়। কট্টরপন্থী দল হিসেবে ফারাজের দলের একটা পরিচিতি আছে। তিনি এই প্রথম ব্রিটিশ সংসদে নির্বাচিত হলেন। তবে তিনি একাই নির্বাচিত হননি। তার দলের মোট চারজন নির্বাচিত হয়েছেন।

দেখতে পাওয়া যাচ্ছে এই দলটি ব্রিটেনের মানুষদের ১৪ শতাংশ সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয়েছে। ফারাজের এই রিফর্ভ পার্টির ভোটের হার, আসন সংখ্যা–এ গুলো কিন্তু কনসারভেটিভ পার্টির ভোটে থাবা বসিয়েছে। ফারাজের দল কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির ভোটের একটা বড় অংশে ভাগ বসিয়ে নির্বাচনের গতিপ্রকৃতিকে অন্যরকম ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

যদি ফারাজের দল এভাবে কট্টরপন্থীদের ভোট না কাটতো, তাহলে হয়তো ব্রিটেনের এবারে নির্বাচনের ফল অন্য রকম হলেও হতে পারত। ব্রিটেনের ৯৮টি আসনে ফারাজের দল দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। বলা যেতে পারে ফারাজের দল এভাবেই লেবার পার্টিকে একটা সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে।

লিবারেল ডেমোক্রেট রা এবারের ভোটে ১২ শতাংশ মানুষের সমর্থন আদায় করতে পেরেছে। গতবারে তাদের আসন সংখ্যা ছিল মাত্র ১১। এবারে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১। অর্থাৎ, দ্বিগুনেরও বেশি।

গ্রিনদের আসন সংখ্যা বেড়েছে ১ থেকে ৪। এই যে নির্বাচনী ফলাফল, সেটা কিন্তু আগের সরকারের নীতির প্রতি সাধারণ মানুষের একটা বড় রকমের অনাস্থার পরিচয়ক। এই অবস্থায় প্রশ্ন হল, বামপন্থীরা কি অবস্থান গ্রহণ করবেন। সরকারের নীতি, ধারা প্রকৃতির অদল বদল ঘিরে স্বভাবতই বামপন্থীদের অবস্থান গ্রহণ করা দরকার

। ধর্মঘট বিরোধী আইন ,প্রতিবাদ বিরোধী আইন–ইত্যাদি যে সমস্ত আইনগুলো রয়েছে, তার পরিবর্তনে বামপন্থীরা কতখানি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন সেটাই এখন সব থেকে বড় দেখবার বিষয়। ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় বিগত ২০০ বছরের নিরিখে নেমে গেছে। প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে জনপরিষেবার দিকগুলি। এগুলির পুনরুজ্জীবনের স্বার্থে বামপন্থীরা কি ভূমিকা নেন, সেটাও দেখবার মতো একটা বিষয়।

লেবার পার্টি তাদেরকে বামপন্থী বলে উপস্থাপিত করবার ক্ষেত্রে, পশ্চিমবঙ্গে, সমাজ মাধ্যমে বামপন্থী রাজনীতির সমর্থক বলে পরিচয় দেওয়া মানুষজনদের মধ্যে বেশ একটা উচ্ছ্বাস দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে পতাকায় লাল রঙ থাকলেই যে সেই দল বামপন্থী এমন তো কোনও ধরা বাধা নিয়ম নেই।

সে কারণেই পশ্চিমবঙ্গে লেবার পার্টির জয়কে যে ভাবে ব্রিটেনে বামপন্থীদের ফিরে আসা বলে দেখানো হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে প্রথমেই জোর দিয়ে বলা দরকার, লেবার পার্টি তাদের যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছিল, সেখানে জনপরিষেবার পুনরুজ্জীবন থেকে শুরু করে ধর্মঘট বিরোধী আইন, প্রতিবাদ বিরোধী আইন–এ সমস্ত কিছু নিয়ে কেবলমাত্র ছুঁয়ে যাওয়া কিছু কর্মসূচি রয়েছে।

বামপন্থীদের যে প্রত্যাশা ব্রিটেনে রয়েছে, সাধারণ জনজীবনের পুনরুজ্জীবন ঘিরে তার কিন্তু কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশাতাহারের মধ্যে ছিল না। লেবার পার্টি মানে কিন্তু একেবারে বামপন্থীদের মতাদর্শের শ্রেণি সংগ্রামের তত্ত্বে বিশ্বাস করেন তাদের সরকার নয়।

সেই কারণেই ব্রিটেনের বামপন্থীদের প্রথম থেকেই এই লেবার পার্টির সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ বজায় রাখতে হবে। যদি মনে করা হয়, কেবলমাত্র ইউনিয়ন বিরোধী আইনের অবসান ঘটালেই লেবার পার্টির সরকার একটা বড় রকমের বামপন্থী পদক্ষেপ নিল, কিংবা শ্রমিকদের অধিকার বৃদ্ধির জন্য তারা তাদের যে সমস্ত জ্ঞানগর্ভ কথা বলেছেন নির্বাচনী ইশতেহারে, সেগুলির প্রয়োগের ব্যাপারে যত্নবান হলেই সবকিছু করে ফেলবেন–এমনটা ভাবা কিন্তু ভুল হবে। সার্বিকভাবে টোরির ব্যয়–বরাদ্দের শৃঙ্খলা যদি ভাঙতে পারা না যায়, তাহলে ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের আর্থ–সামাজিক জীবনের অদল বদল ঘিরে স্বপ্নটা অধরাই থেকে যাবে।

টোরির এই যে ব্যয় বরাদ্দের শৃঙ্খলা, তা কিন্তু গোটা ব্রিটেন জুড়ে সঙ্কট তৈরি করেছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার অনাচার তৈরি করেছে। শিক্ষার অনাচার তৈরি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন–সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনাচার তৈরি করেছে।

এই বিষয়গুলির দিকে যাতে লেবার পার্টির সরকার প্রথম থেকে যত্নবান হয়, সেদিকে ব্রিটেনের জনগণকে সতর্ক দৃষ্টি দিয়ে চলতে হবে। একটা কথা মনে রাখা দরকার, সাধারণ মানুষের রুটির প্রশ্নে, ব্রিটেনের এই সদ্য সমাপ্ত ভোটে টোরিদের যে পরাজয়, তা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক।

কিন্তু মনে রাখা দরকার, তার মানে যে, লেবার পার্টির সরকার, তারা কিন্তু আদৌ বামপন্থী সরকার নয়। এই সরকার একেবারেই দক্ষিণপন্থী সরকার। আর দক্ষিণপন্থী সরকার সম্পর্কে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কখনো কোনওরকম মোহ থাকতে পারে না।

ব্যয় সংকোচ ঘিরে উঠে আসা প্রশ্নগুলি সাধারণ মানুষের সার্বিক ঐক্যের একটা পরিচয়। বেসরকারিকরণ নিয়ে পূর্বতন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধিতা সেটাও কিন্তু মানুষের ঐক্যেরই একটি দিক উন্মোচিত করে। ইউক্রেন–সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্রিটেনের যে যুদ্ধবাজ মানসিকতা, তার বিরুদ্ধেও কিন্তু এবারের ভোটে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিটা প্রকাশিত হয়েছে।

সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, তাঁরা যে প্রশ্নগুলো গত নির্বাচনে তুলে ধরতে সফল হয়েছেন, সেখানে প্রতিষ্ঠানপন্থী রাজনৈতিক দল, রাষ্ট্র আর সেখানকার সার্বিক সংবাদমাধ্যমের মধ্যে যে বোঝাপড়া–এই বিষয়গুলো কিন্তু বারবার উঠে এসেছিল। মানুষ খুব ভালভাবেই জানত, এই যে প্রশ্নগুলো উঠে আসছে, ভোট রাজনীতি স্বাভাবিকভাবে এগুলোর কোনও সমাধান করতে সক্ষম হবে না।

টোরি সরকারের যে জনবিরোধী নীতির ধারাবাহিকতা, সেগুলিকে প্রবাহিত রাখবার ক্ষেত্রে স্টার্মারের দক্ষিণপন্থী লেবার সরকার সচেষ্ট থাকবে, এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।

এ বারের ভোট ঘিরে স্টার্মার সরকারের স্লোগান ছিল, ‘পরিবর্তন’। সেই স্লোগান বারাক ওবামা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই ব্যবহার করেছেন। স্টার্মারের এই ‘পরিবর্তন’ ঘিরে ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টি সুস্পষ্ট ভাবেই বলেছে, যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, সেই পরিবর্তন হবে কেবলমাত্র পুঁজিবাদ আর শাসক শ্রেণীর সম্পদ রক্ষার জন্য পাহারাদারের অদল বদল।

তাই ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির মূল্যায়ন হল, স্টার্মারের জয় কখনও, কোনও অবস্থাতেই শ্রমিকদের কাছে বড় ধরনের কোন ইতিবাচক বিষয় হতে পারে না।
তথ্যসূত্র: আজকাল অনলাইন এর সৌজন্যে

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ