বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
শিবগঞ্জ(চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা :
দীর্ঘদিন তাপদাহের পর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে হয়েছে বৃষ্টি। প্রকৃতি ও প্রাণীকুলে প্রশান্তি এনে এনে দেয়া এ বৃষ্টি। তবে বেশ কিছু এলাকায় হওয়া শিলা বৃষ্টির কারনে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে মাঠ ফসলের। আম চাষীরা বলছেন, আমের জন্য এখন বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন, তবে জেলাজুড়ে হওয়া বৃষ্টিপাত প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম, তারপরও যেটুকু হয়েছে তাতে আমের জন্য উপকার বয়ে আনবে। তবে যেসব এলাকায় শিলা পড়েছে, সেখানে আমের কিছুটা ক্ষতি হয়ে গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিভাগের তথ্য অনুয়ায়ী, বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে জেলাজুড়ে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তার পরিমান ৫ দশমিক ৬ মিলি মিটার। এ সময়ে জেলার বেশ কিছু এলাকায় কিছু সময়ের জন্য হয় শিলা বৃষ্টিও। আর এ শিলা বৃষ্টিতে সবচেয়ে ক্ষতি করেছে মাঠে থাকা বরো ধানের। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর, জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও আর শিলা পড়েনি। ফলে অনেকটায় আশাবাদী হয়েছে আমচাষীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন জানান, তাদের ১২ বিঘা জমির ধান আর কিছুদিন পরই ঘরে তুলতেন। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ধান অনেকটা মাটির সাথে মিলিয়ে গেছে। ১২ বিঘা জমি থেকে শেষ পর্যন্ত যৎ সামান্য ধানই ঘরে তুলা যাবে, ধানের শীষ সবাই ঝরে গেছে। এখন ধান আবাদ করতে যে খরচ হয়, একদমই পুরোপুরি ক্ষতির মুখে পড়ে গেলাম।
অন্যদিকে আম চাষীরা বলছেন, তাপদাহে যে পরিমান মাটি শুকিয়ে আসে, সেই তুলনায় পানি হয়েছে খুবই কম, গাছের পাতা কিছুটা ভিজা হয়েছে। আরো পানি দরকার।
শিবগঞ্জের আম উদ্যোক্তরা জানান, বুধবার বিকালে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে গাছের পাতা ভিজা হয়েছে। আরো বড় বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। এ উদ্যোক্তা বলেন, বৃষ্টিপাতের পরেও তাকে সেচ কন্টিনিউ করতে হচ্ছে, বৃহস্পতিবার বিকালে কথা বলার সময় তিনি বলেন, এখনও আমার বাগানে সেচ চালু রেখেছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশন এর সাধারন সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, বৃষ্টিপাত আমের জন্য উপকার বয়ে আনবে, তবে দীর্ঘদিনের রুক্ষতার পর এটুকু বৃষ্টিপাতে কিছুই হবে না, বৃষ্টিতে গাছ ধুয়ে গাছ বেয়ে, গোড়ায় মাটিতে পানি আসতে হবে, তাহলে আমের জন্য কার্যকর হবে। দুদিন যে বৃষ্টি হয়েছে তা সামান্যই। তারপরও কিছুটা আমের উপহার হয়েছে, অন্য ফসলেরও বৃষ্টিতে ক্ষতি যে হবে তেমনটা নয়। তবে যেসব এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়েছে, সেখানে আম ও মাঠ ফসল দুটোই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. পলাশ সরকার জানান, বৃষ্টিপাত আমের জন্য সহায়ক হলেও, কিছু এলাকায় হওয়া শিলায় কিছুটা ক্ষতি হবে, তবে তা খুব বেশি নয়, পাকা ধানেই কিছুটা বেশি ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে আমরা মাঠ থেকে যে প্রাথমিক প্রতিবেদন পেয়েছি, তাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭২৮ হেক্টর জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে, এরমধ্যে বরো ধান আছে ১১৪৫ হেক্টর, আম ৩৯৬ হেক্টর।