স্বাগত ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ ।। অপার সম্ভাবনায় আবারো বাংলাদেশ

আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০১৭, ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

২০১৬ সাল অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও সহিংসতার মধ্যে গেলেও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সক্ষমতা দেখিয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। সামাজিক অনেক সূচকেই বাংলাদেশ অন্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তদুপরি বিদায়ি বছর জুড়ে ভীতি- আতঙ্ক, পিছু ছাড়েনি। তবে জঙ্গিবাদ দমনে ২০১৬ সাফল্যের বছর। এটি একটি স্বস্তিরও ব্যাপার। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে দেশ নতুন বছরে অর্থাৎ ২০১৭ সালে পদার্পণ করলো। এই সূচনা নতুন কিছু ইতিবাচক ধারণার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নতুন বছরে বাংলাদেশ আরো ভাল করবে, সেই প্রত্যাশা দারুণভাবে উজ্জীবিত।
৬ শতাংশের বৃত্তে আটকে থাকা জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিদায়ীবছর ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করেছে। বিদেশি মুদ্রার ভা-ার ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যয়েই আটকে রাখা গেছে। বাড়ছে বিদেশি ঋণ-সহায়তা; রাজস্ব আদায়ের গতিও ভালো। এ বছর জঙ্গিবাদের নতুন উত্থান চোখ রাঙালেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সাফল্যে’ অর্থনীতিকে খুব বেশি ভুগতে হয়নি। ব্রেক্সিট এখন পর্যন্ত কোনো বিপদ ঘটাতে পারেনি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমও এ বছর বাংলাদেশে এসে অগ্রগতির প্রশংসা করে গেছেন।
২০১৬ সাল জুড়েই ছিল নির্বাচন। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়েছে ফ্রেবুয়ারি থেকে জুন মাস জুড়েÑ ৬ ধাপে। বছরের শেষে অর্থৎ ডিসেম্বর মাসে দুটো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। একটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং সব শেষে জেলা পরিষদের নির্বাচন। ইউইি নির্বাচনে বেশ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছেÑ সারা দেশে মারা গেছেন শতাধিক মানুষ। কিন্তু শেষে দুই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছে। বিদায়ী বছরের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ইউপি নির্বাচন দলীয় ভিত্তিতে এবং দলীয় প্রতীক সংবলিত নির্বাচন হয়েছে। এর পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা ও সমালোচনা ছিল। বছর ধরেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের বিস্তর অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রƒারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই বিদায়ী বছরের  শেষ লগ্নে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই লক্ষে রাষ্ট্রপতি নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলেচনা অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি তাদের গোঁ-ধরা তত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা থেকে অনেকটাই সরে এসেছে। এবং দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তাঁর ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন।
শুভ ইঙ্গিত নিয়েই বাংলাদেশ নতুন বছরে প্রবেশ করেছে। ৩০ ডিসেনম্বর জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। সজীব স্বপ্ন বুকে করে ঘুমিয়েছে আর সকালে সেই স্বপ্নই দিনের শুরুতে নতুন শপথে উদ্ভাসিত করেছে কোটি শিশুকে। ২০১৭ এর সকালের প্রথম সূর্যটাও অন্যরকম রং ছড়াবে। এই রঙ আবহ তৈরি করবে আনন্দ-উচ্চ¦াসের- ভবিষ্যত নির্মাণের। দেশের  কোটি কোটি  শিশু বই উৎসবে সামিল হবে আজ, বুক ভরে নতুন বইয়ের গন্ধ নিবে। প্রতিটি বই স্বপ্নফুল হয়ে শিশুদের হাতে হাতে শোভা পাবে।
এসব শিশুর ভবিষ্যত নির্মাণের দায়িত্ব অভিভাবকদের, রাজনৈতিক নেতৃত্বের। তারা কোনোভাবেই শিশুদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে পারে না- তা কোনো অজুহাতেই।  নতুন বছরে আমরা যেন নির্ভয়ে সব উসব আনন্দচিত্তে উদযাপন করতে পারি, মুক্ত চিন্তার প্রকাশে অন্ধকারের শক্তি যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়- গণতন্ত্র অনুশীলনের পথ উন্মুক্ত হোক, বাংলাদেশ অফুরান সম্ভাবনার পথচলা জাতির ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে সফৈ হোক এইটাই প্রত্যাশা।
ইংরেজি নববর্ষে দৈনিক সোনার দেশ এর সকল পাঠক, শুভ্যানুধায়ী ও বিজ্ঞাপনদাতাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।