মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
উত্তরাধিকার সূত্রে মৃত স্বামীর সম্পত্তির পাওনা বুঝে পাওয়ার দাবিতে নগরীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক অসহায় গৃহবধূ। গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর একটি কমউিনিটি সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গৃহবধূ রোজিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ২০০৪ সালের ২৩ জুলাই পারিবারিকভাবে ভদ্রা এলাকার মৃত আব্দুস সামাদ মন্ডলের ছেলে মৃত এইচএম আতাউর রহমানের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর সাথে পারিজাত পদ্মা আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এরপর ২০০৪ সালেই তার শ্বশুরের মৃত্যু হয়। ২০০৭ সালে তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। প্রথম সন্তান জন্ম নেয়া এবং আরেক সন্তান পেটে থাকতেই তার স্বামী কর্মস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এর কিছুদিন পরে তার দ্বিতীয় সন্তান জন্ম নেয়। দুই সন্তান নিয়ে তিনি গত ৫ বছর ধরে অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর শাশুড়ি তার খোঁজ-খবর রাখেন নি।
এতদিন তিনি বাবার বাড়িতে থাকলেও বাবা অসুস্থ হয়ে পড়াই তিনি তার সন্তানদের খরচ বহন করতে অসমর্থ্য হয়ে পড়েছেন। এই ৫ বছরে তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা কোন সম্পত্তি বুঝিয়ে দেননি। ভদ্রায় যে বাড়িটি রয়েছে উত্তরাধিকার সূত্রে সেই বাড়ির মালিক তার স্বামী। শুধু ভদ্রা নয় নওগাঁসহ বিভিন্ন জায়গার যে জমি ও বাড়ি রয়েছে সব সম্পত্তির মালিক উত্তরাধিকার সূত্রে তার স্বামী। অথচ তার দুই ননদ ও তার জামাইদের সাথে যোগসাজোশ করে একা একা ভোগ করছে। আর এই দিকে তার দুই সন্তানসহ তিনি অর্থাভাবে দিনাতিপাত করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, স্বামীর ন্যায্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর তিনি নারী ও শিশুর আইনি সহায়তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি গৃহবধূ রোজিনার শাশুড়িকে বিষয়টি জানালে রোজিনার শাশুড়ি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বর্তমানে সংগঠনটি তার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাই তিনি প্রশাসনসহ বিবেকবান মানুষের কাছে আহবান জানান যে যাতে তারা উত্তরাধিকার সূত্রে স্বামীর সম্পত্তি বুঝে পান সেই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে।
এ বিষয়ে নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা নোটিশ করেছি। আমাদের আফিসের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে মীমাংসা না হলে আমরা মহামান্য আদালতের দারস্থ হয়ে গৃহবধূ রোজিনার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেব।
গৃহবধূ রোজিনা আক্তারের শাশুড়ি আফরোজা বেগমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগপি বিচ্ছিন্ন করে দেন। তারপর একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।