হত্যা মামলার পলাতক আসামী গ্রেপ্তার

আপডেট: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩, ৯:০৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক আসামী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামুনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তাকৃত মামুন গোদাগাড়ীর উজানপাড়া রেলগেট এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রেস বিফিংয়ে র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুমীন ফেরদৌস অনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্য জানান। এর আগে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) র‌্যাব-৫, সিপিএসসি এর অভিযানে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন কাশিয়াডাঙ্গা মোড় হতে তাকে আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তাকৃত মামুনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পেশায় একজন রড মিস্ত্রী। সে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে ভিকটিম সম্পা খাতুনকে (৩০) বিয়ে করে। তাদের সংসার জীবনে ২টি ছেলে ও ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। মামুন কর্মসূত্রে কুমিল্লা জেলায় অবস্থান করে। মাঝে মাঝে ছুটিতে বাড়িতে বেড়াতে আসে। বাসায় এসে সে জানতে পারে যে, তার স্ত্রী তার মেজো ভাইয়ের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত।

শুধু তাই নয়, তার মেজো ভাই তার স্ত্রীসহ আরো কয়েকজন মেয়েদেরকে দিয়ে অসামাজিক কাজ করায়। এরপর সে তার স্ত্রীকে কঠোরভাবে সতর্ক করে এবং নিজ কর্মস্থলে চলে যায়। কিছুদিন পর সে ছুটিতে বাড়ীতে এসে স্ত্রীর ব্যবহৃত ফোনে দেখতে পায় যে, বিভিন্ন লোকজনের সাথে তার স্ত্রীর অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও রয়েছে। পরবর্তীতে সে তার স্ত্রীকে সংশোধনের উদ্দেশ্যে তার নিজ কর্মস্থল কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করে। সেখানে থাকা অবস্থায় কিছুদিন পরে সে জানতে পারে যে, তার স্ত্রী পুনরায় কর্মস্থলের অন্যান্য সদস্যের সাথেও অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে।

পরবর্তীতে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে নিয়ে আসে। কিন্তু এলাকায় আসার পরে তার স্ত্রী আবারো আটককৃত ব্যক্তির মেজো ভাইয়ের সাথে পুনরায় অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। ফলে আটককৃত ব্যক্তি বাধ্য হয়ে আবারো বাসা পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর পাঠানপাড়ায় তার স্ত্রীর পিতার বাড়ীর কাছে একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে রাখে এবং আটককৃত মামুন তার নিজ কর্মস্থল কুমিল্লায় ফিরে যায়।

কিন্তু কিছুদিন পরে মামুন তার কর্মস্থল কুমিল্লা থেকে গত ১৭ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জে তার স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে। পরবর্তীতে মামুন ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে থাকা তার স্ত্রীর অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও দেখতে পায় এবং কৌশলে সেই মোবাইলটিতে থাকা মেমোরিকার্ডটি নিয়ে নেয়। তার স্ত্রী যখন জানতে পারে যে, তার অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও রাখার মেমোরিকার্ডটি তার স্বামীর কাছে আছে। তখন মামুনের স্ত্রী উক্ত মেমোরিকার্ডটি উদ্ধারের জন্য প্রথমে মামুনের মেজো ভাই হারুন অর রশিদ কমলকে ফোন দেয় এবং মেমোরিকার্ডের ঘটনাটি বলে।

হারুন অর রশিদ কমলের নির্দেশনা মোতাবেক মামুনের স্ত্রী সম্পা তার পরিবারের লোকজনদের সহায়তায় মামুনকে টর্চার শুরু করে এবং সারারাত একটি ঘরের ভিতর আটকে রাখে। ঘটনার দিন ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ সকালে মামুনের স্ত্রী মামুনকে আটকে রাখা ঘরে আসে। একপর্যায়ে মামুনের স্ত্রী তার ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করে এবং ঘনিষ্টতার একপর্যায়ে তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে সকলের অগোচরে উক্ত বসতবাড়ী হতে পলায়ন করে। পরবর্তীতে ভিকটিম মৃত সম্পার বড় ভাইয়ের স্ত্রী মোসা. হালিমা শিল্পী (৪০) বাদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ