বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘লোকে বলে বলে রে, ঘর বাড়ি ভালা না আমার’-এ গান রচিত হয়েছে বহুকাল আগে। তবে আজও এ গান মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে দেখা যায় সঙ্গীত অনুরাগীদের। গানের রচয়িতার নামও আমাদের সবার জানা, হাসন রাজা। শতবর্ষ আগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেও তার সৃষ্টি বেঁচে আছে এখনও।
এ কবি ও বাউল শিল্পীর জন্মবার্ষিকী আজ।
১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হাসন রাজা। তিনি ছিলেন গীতিকার, বাউল শিল্পী ও মরমী কবি। জমিদার পরিবারের ছেলে ছিলেন হাসন রাজা। হাসন রাজা নামে সবার কাছে পরিচিত হলেও তার পুরো নাম দেওয়ান হাসন রাজা চৌধুরী। যদিও শৈশবে তার নাম অহিদুর রেজা রাখেন তার বড় ভাই ওবায়দূর রেজা ও বাবা দেওয়ান আলী রেজা চৌধুরী। বলা হয়ে থাকে হাসন রাজা লালন শাহ’র পথিকৃত।
হাসন রাজার মা হুরমুথ জাহান বিবি ছিলেন দেওয়ান আলী রাজার পঞ্চম ও শেষ স্ত্রী।
বাবা দেওয়ান আলী রাজা মারা গেলে অল্প বয়সেই জমিজমা দেখাশোনার দায়িত্ব কাঁধে নেন হাসন রাজা।
১৯১৪ সালে হাসন রাজা তার ২০৬টি গানের সংকলন বই আকারে প্রকাশ করেন। মূলত গানগুলো ছিল সৃষ্টিকর্তার প্রতি তার ভক্তি নিয়ে। তার গানে সবসময় ছিল স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধা, স্রষ্টার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা, ভোগ-বিলাস নিয়ে তার ভাবনার বহিঃপ্রকাশ। সৌখিন বাহার ও হাসন বাহার তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলী। এছাড়া তার গানকে প্রাণবন্ত করে তোলে বিভিন্ন আঞ্চলিক শব্দ।
নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রণাথ ঠাকুরও তার একটি ভাষণে হাসন রাজার নাম উল্লেখ করেন। উল্লেখ করেন হাসন রাজার দর্শন ও সঙ্গীতের কথা।
মহান এ ব্যক্তির স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে তার জন্মস্থানে নির্মাণ করা হয়েছে হাসন রাজা জাদুঘর। সুনামগঞ্জে হাসন রাজা, রাধারমণ ও বাউল শাহ আবদুল করিম- এ তিন লোককবির স্মরণে লোক উৎসব আয়োজন করা হয়। ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মারা যান হাসন রাজা।