হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যে মাটি ও মানুষকে নির্দিষ্ট করে চেনা যায়

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪, ৮:৩৫ অপরাহ্ণ

হাসান আজিজুল হকের জন্মদিনের আলোচনায় বক্তারা


নিজস্ব প্রতিবেদক:হাসান আজিজুল হক ও তাঁর সাহিত্য কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যে মাটি ও মানুষকে নির্দিষ্ট করে চেনা যায়। তাঁর সাহিত্য-সম্ভার মানুষের পরিবর্তনের পথনির্দেশ দেয়। তিনি মানবিক ও সাম্যের স্বদেশ গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

রাজশাহী লেখক পরিষদের উদ্যোগে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক এঁর জন্মদিন পালিত হয়েছে। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর রাজশাহী এসোসিয়েশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী লেখক পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমীন প্রামাণিক।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, দেশবরেণ্য কবি ও শিক্ষক জুলফিকার মতিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএস’র অধ্যাপক ও ভাষাবিদ ড. স্বরোচিষ সরকার, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. ফরিদা সুলতানা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কবি ও ছড়াকার হাসনাত আমজাদ, দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- চলচ্চিত্র নির্মাতা আহসান কবীর লিটন।

এসময় উপস্থিত বক্তারা বলেন, হাসান আজিজুল হক সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। দেশবরেণ্য এই কথাসাহিত্যিক সসম্মান জানিয়ে সভা- সেমিনার করা যায় কিন্তু তাঁকে বুকের ধন করে আগলে না রাখলে কাক্সিক্ষত পরিবর্তনটা আসবে না।

বক্তারা বলেন, সৃজনশীল মানুষরা সবসময় একা থাকে, একা লড়াই করে। মানুষকে তারা মক্কা ভাবে। মানুষ ছাড়া তারা নয়।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত বাংলার বর্ধমানের যবগ্রামে জন্ম নেন তিনি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশুনা নিজের গ্রামেই করেছেন হাসান আজিজুল হক। তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী রচনা লিখে দেশের সাহিত্যাঙ্গনে নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। গল্পগ্রন্থ সমুদ্রের স্বপ্ন, শীতের অরণ্য কিংবা উপন্যাস আগুনপাখি তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। এর ফলে ১৯৯৯ সালে ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন হাসান আজিজুল হক। ‘আগুনপাখি’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার।

২০১২ সালে তিনি ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি পান। এছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, পাতালে হাসপাতালে, নামহীন গোত্রহীন, চলচ্চিত্রের খুটিনাটি, মা মেয়ের সংসার, বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প, সক্রেটিস, বৃত্তায়ন, শিউলি, আগুনপাখি, ফিরে যাই ফিরে আশি, উঁকি দিয়ে দিগন্ত প্রভৃতি।
কবি কুঞ্জের আলোচনা

শুক্রবার ( ০২ ফেব্রুয়ারি ) রাজশাহীর স্বনামধন্য সাহিত্য সংগঠন কবিকুঞ্জে পালিত হলো সাহিত্যের বরপুত্র, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হকের ৮৬ তম জন্মদিন। নগরীর মিয়াপাড়াস্থ বঙ্গবন্ধু পরিষদের সবুজ বেষ্টিত সুবৃহৎ কক্ষে আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন কবিকুঞ্জের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক। অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশ করেণ্য কবি অধ্যাপক জুলফিকার মতিন, কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইন, অধ্যাপক গোলাম কবির, কবি সালিম সাবরিন, কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার, কথাসাহিত্যিক মোস্তফা তারিকুল আহসান, অধ্যাপক সৈকত আরেফিন, চিত্রকর তাবরেজি, কবিকুঞ্জের উপদেষ্টা কবি হাসিবুল ইসলাম প্রমুখ।

আয়োজনে কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হকের জীবন ও কর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। কথাশিল্পীকে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কবি মেহবুব ইসলাম রহমত, কবি ওয়ালী উল ইসলাম, কবি বিথি মজিদা, কবি আলমগীর মালেক, কবি শামীমা ডেইজি লিপি, কবি শাহনওয়াজ প্রামাণিক সুমন, কবি হাবিবুল ইসলাম তোতা। পুরো আয়োজন সঞ্চালনা করেন কবি আরিফুল হক কুমার ।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ