নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে হিমাগারে প্রতিকেজি আলু সংরক্ষণের ভাড়া সাড়ে ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হবে ৫০ পয়সা শ্রমিক চার্জ। সবমিলে প্রতিকেজি আলু সংরক্ষণের খরচ দাঁড়াচ্ছে ৬ টাকা। আর পেইড বুকিং আগের চুক্তি অনুযায়ী বহল থাকবে। তার সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা।
সোমবার (১৬ জুন) বিকেল তিনটার দিকে রাজশাহী সেনানিবাসের সভা কক্ষে আয়োজিত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন- রাজশাহী সেনাবাহিনী ক্যাম্পের একজন কমান্ডার।
সেনানিবাসের অনুষ্ঠিত সভায় রাজশাহীর আলু ব্যবসায়ী, আলু চাষী, হিমাগার মালিক, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনানিবাসে নেওয়া সিদ্ধান্ত রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরকালে উপস্থিত ছিলেন- সেনাবাহিনীর মেজর ছাড়াও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান, রাজশাহী জেলা আলুচাষী ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী, সহসভাপতি আলম আলী, সাধারণ সম্পাদক মিঠু আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিব, সদস্য শহিদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চলতি বছরে হিমাগারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ টাকা ৭৫ পয়সা। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রেও আগের চুক্তি না মেনে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানায়। এ নিয়ে আলু মৌসুম থেকে চাষী ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবি হিমাগার কর্তৃপক্ষ না মানায় দুপক্ষের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছিল দীর্ঘদিন থেকে।
এ নিয়ে বিগত সময়ে সভা, সমাবেশ ও সড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভ মিছিল করে চাষী ও ব্যাবসয়ীরা। সর্বশেষ রোববার (১৫ জুন) দুপুরে পবা উপজেলার বায়ায় হিমাগারের বাড়তি ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা।
হিমাগারে আলু রাখা ও বুকিং কাটা আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত বছরগুলোতে বস্তায় করে আলু হিমাগারে রাখা হতো। তখন বস্তা ধরে হিসাব রাখা হতো। প্রতি বস্তায় ৮০ থেকে ৯০ কেজি পর্যন্ত আলু থাকতো। গত বছর আলু কমিয়ে ৫০ কেজি করে রাখা হয়। সে হিসেবে প্রতিকেজি আলু রাখতে তাদের খরচ পড়ে ৪ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এবার স্টোরেজ মালিকেরা কেজি প্রতি ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আলু রাখা থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ মিলে এখানে ৭ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে- দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে রাজশাহী সেনানিবাসে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন-সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছাড়াও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, রাজশাহী জেলা আলুচাষী ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী, সহসভাপতি আলম আলী, সাধারণ সম্পাদক মিঠু আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিব, সদস্য শহিদুল ইসলাম।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা আলুচাষী ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঠু আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন থেকে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের খরচ কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিলাম আমরা। সোমবার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সভা চলেছে হিমাগার ও আলু চাষী-ব্যবসায়ীদের। সভায় হিমাগারের আলু সংরক্ষণের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে আমরা খুশি।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তাই এবিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ বলেন, সেনানিবাসে আলু চাষী-ব্যবসায়ী, হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা সভা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে- হিমাগারে প্রতিকেজি আলু সংরক্ষণের ভাড়া ৫ টাকা ৫০ পয়সা। সেই সঙ্গে যুক্ত হবে ৫০ পয়সা শ্রমিক চার্জ। আর পেইড বুকিং আগের চুক্তি অনুযায়ী বহল থাকবে। তার সঙ্গে শুধু শ্রমিক খরচ যুক্ত হবে ৫০ পয়সা।