সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল বাজারে হোমিও চিকিৎসার নামে দীর্ঘদিন থেকে বিশাক্ত স্প্রিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। সেখান থেকে কেনা স্প্রিট পান করে অতি সম্প্রতি তিনজনসহ গত এক বছরে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অন্ধ হয়েছে আরো অন্তত তিনজন।
অভিযুক্ত চিকিৎকের নাম বিশ্ববিৎ সান্যাল (৪০)। তিনি উপজেলার মানইর গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ সান্যালের ছেলে এবং জোনাইল সেন্ট লুইচ উচ্চবিদ্যালয়ের হিন্দু ধর্মের শিক্ষক। গত রোববার সন্ধ্যার পর পুলিশ তাকে দোকান থেকে বিশাক্ত স্প্রিটসহ আটক করে। পরে তার নামে হত্যা ও মাদকের পৃথক দুইটি মামলা দিয়ে নাটোর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে জোনাইল বাজারে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বজিৎ দীর্ঘদিন থেকে হোমিও চিকিৎসার নামে বিসাক্ত বিসাক্ত বিশাক্ত রেকটিভাইড স্প্রিট বাংলা মদের বিকল্প হিসেবে বিক্রি করে আসছিলেন। গত শুক্রবার তার দোকান থেকে নেয়া স্প্রিট পান করেন বোর্ণী বাগবাচ্চা গ্রামের দিলিপ গমেজ (৫৬), তার বড় জামাতা ক্যান্টন গমেজ (৪০), ছোট জামাতা আদগ্রামের উজ্জাল কস্তা (৩৮) ও তাদের বন্ধু পিওভাগ গ্রামের রাফায়েল কস্তা। এরপর বিষক্রিয়ায় ওইদিনই উজ্জল কস্তা মারা যান। এরপর রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিলিপ গমেজ ও রাফায়েল কস্তা। আর এখনো হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ক্যান্টন গমেজ। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে স্প্রিট পান করে মারা যান মানইর গ্রামের সম্পদ রায় (২২), গত জুন মাসে আদগ্রামের প্রশান্ত কস্তা (৩০) ও মে মাসে বোর্ণী গ্রামের বিমল চাকমা (৪৫)। এছাড়া স্প্রিট পান করে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বাগবাচ্চা গ্রামের মাইকেল রড্রিক্স, ইগ্নেশিউস কত্তা ও জোনাইল গ্রামের আবদুল আজিজ মোল্লা ও চরগোবিন্দপুর গ্রামের নাসিম উদ্দিন।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্রিয়ার খান বিশ্বজিতের নামে হত্যা ও মাদক মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হোমিও চিকিৎসার নামে স্প্রিট বিক্রির বিষয়টি জানা ছিলো না। এর আগে কেউ কখনো অভিযোগও করে নি। এবার স্প্রিট পানে এক সঙ্গে তিনজনের মৃত্যু হওয়ার খবর শুনে হোমিও চিকিৎসার নামে স্প্রিট বিক্রেতা বিশ্বজিৎ সান্যালকে গ্রেফতার করা হয়। এখন থেকে নিয়মিত উপজেলার বিভিন্ন হোমিও চিকিৎসালয়ে অভিযান চালানো হবে।