শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
শিবগঞ্জ প্রতিনিধি:
পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে পল্লী বিদ্যুতের খাম্বা পড়ে যাওয়ায় ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে চরাঞ্চলের দেড় হাজার পরিবার। এতে করে ভোগান্তির মুখে পড়েছে ৭ হাজার মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুপুর-সাত্তার মোড় এলাকায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, খাম্বা পড়ে যাওয়ার বিষয়টি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে কানসাট পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা।
শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, ১০ দিন আগে ভরা বন্যার সময় পাঁকা ইউনিয়নের সাত্তার মোড়ে পদ্মা নদীর তীরের সাত্তার মোড়ে একটি খাম্বা নদীতে পড়ে যায়। তখন থেকেই এলাকাবাসী বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত আছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় সাত হাজার মানুষ। গরমে মানুষ ঘরে টিকে থাকতে পারে না। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে না। বিভিন্ন ধরনের কল-কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। মসজিদে মাইকে আজান দিতে না পারায় মুসল্লিরা পড়েছে বিপাকে। তাছাড়া আধুনিক যুগে ঘরে ঘরে ফ্রিজ আছে এবং ফ্রিজে নানা ধররনের পণ্য রাখা আছে যা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি কানসাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে জানালেও কোনো প্রতিকার হয়নি।
এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও পাকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে বৃহত্তর দিয়াড় এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ ১০দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ কওে নি। তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
চর হাসানপুর ও লক্ষীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিমুল হক ও সহকারী শিক্ষক আব্দুল বারী জানান, এমনিতে পদ্মার ভাঙন এলাকা হিসাবে পরিচিত পাঁকা ইউনিয়নের বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারেনি। তারপর কাটা ঘায়ে নুনের ছিঁটানির মত ১০দিন ধরে প্রায় দেড় হাজার পরিবারের সাত হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারমধ্যে কয়েকশো শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে পারছে না। আমরা দ্রুত বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর সহ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, পদ্মা নদীতে বন্যায় তীব্র স্রোতের কারণে একটি বিদ্যুতের খাম্বা পানিতে পড়ে যাওয়ায় ওই এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে। কিন্তু বন্যার পানি পুরাপুরি না কমলে খাম্বাটি পুনঃস্থাপন করা যাচ্ছে না। তবে নদী থেকে বন্যার পানি কমলেই দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।