রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
প্রার্থীদের এই বিশৃঙ্খলা মোটেও কাম্য নয়
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন জমতে শুরু করেছে। অন্তত নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অর্থেই আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। অর্থাৎ নাগরিকমুখে নির্বাচনের কথা হচ্ছে। আড্ডাখানাতেও নির্বাচনের কথা হচ্ছে। নির্বাচনের বিরোধিতাতেও নির্বাচনের কথা হচ্ছে। হয়ত নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে। সেটা জানার ব্যাপারেও উৎসুক ভোটাররা। এমন পরিস্থিতিতেই দেশের মানুষ নির্বাচনের মাঠে সরব আছেন।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন পর্যন্ত ৩০০ টি সংসদীয় আসনে ২ হাজার ৭১১টি মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে ৭৪৭টি। এছাড়া ৩২টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে এক হাজার ৯৬৬টি।
ইতোমধ্যেই নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘনের মত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটছে। এখন পর্যন্ত আচরণ বিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় আওয়ামী লীগের মনোনিত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেশ এগিয়ে আছেন। সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তিনজন মন্ত্রী, মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ ১২ প্রার্থীকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন নিয়ে অতি কৌতুহল এবং আবেগতাড়িত হয়ে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের মত ঘটনা ঘটাচ্ছেন প্রার্থীরা। অনেকেরই আচরণ বৈশিষ্ট্য এমন যে, দলের মনোনয়ন পেয়ে তারা জিতেই গেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্বের নির্বাচন মনে করার কোনো কারণ নেই। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদেরই বিষয়টি সর্বাগ্রে হৃদয়াঙ্গম করা উচিৎ। কেননা নির্বাচনের সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা তাদেরই নিশ্চিত করার কথা। বাংলাদেশের নির্বাচন বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। নির্বাচন নিয়ে ওই সব দেশের বাড়াবাড়িও প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। বিএনপি-জামাতসহ সমমনা দলগুলো সরকারের পদত্যগের এক দফা দাবিতে এক মাস ধরে অবরোধ হরতাল করে আসছে।
এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করাই এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সরকারের জন্য এবং নির্বাচন কমিশনেরও। সরকার সে লক্ষেই তাদের নির্বাচনের কৌশল এগিয়ে নিচ্ছে। সে মুহূর্তে দলীয় প্রার্থীরাই যদি নির্বাচনি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করতে থাকেন, সে ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ পাবেই। এ ব্যাপারে ক্ষমত্সীন দল, সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে। প্রার্থীদেরও উচিৎ হবে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য শৃঙ্খলা ও পরিবেশ রক্ষা করা তাদেরই একটি চ্যালেঞ্জ।