২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফল হোক

আপডেট: জুন ২, ২০২৩, ১:০১ পূর্বাহ্ণ

স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম ধাপ হিসেবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। উচ্চপ্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে এবারের বাজেটে। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ শতাংশ। ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ এই শিরোনামে বাজেট উপস্থাপনা হয়েছে। বর্তমানে নানা রকম সংকটের মধ্যেও স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১-এর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদে বাজেটের ডিজিটাল উপস্থাপনা প্রদর্শিত হচ্ছে।
প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। বাজেটের এই ব্যয় মেটাতে মোট আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। করমুক্ত আয়ের সীমা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে সরকারের মোট ব্যয় মেটাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়াও সরকারের আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য প্রণীত নতুন বাজেটে সরকারের পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। এই বাজেট পাস হবে আগামী ২৬ জুন। কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রথম জাতীয় বাজেট উপস্থাপিত হয় ১৯৭২ সালের ৩০ জুন। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ।
দেশের প্রথম বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এসে এই বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা বাংলাদেশের বাজেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
রাজনৈতিক সরকারের জন্য জাতীয় বাজেট বাস্তবায়ন সমসময়ই চ্যলেঞ্জের ছিল। বৈশ্বিক মহামারি করোনা এবং ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধের অভিঘাত মোকাবিলায় ২০২৩-২৪ বাজেট বাস্তবায়ন অবশ্যই চ্যালেঞ্জপূর্ণ। নানা সংকটে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা সে ক্ষেত্রে পথ দেখাবে নিশ্চয়। রাজনৈতিক সরকারের প্রণীত বাজেটে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের দর্শন প্রতিফলিত হয়। নিশ্চয় রাজনৈতিক সরকার সফল হতেই সচেষ্ট হবে- সেটাই প্রত্যাশিত। আর ১৭ কোটি মানুষের দেশে প্রস্তাবিত বাজেট মোটেও উচ্চাভিলাষী নয়। দক্ষতা, সক্ষমতা ও উন্নত ব্যবস্থাপনার বিচারে বাজেট বাস্তবায়ন করা কঠিন কাজ নয়। সেই সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবে- তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রস্তাবিত বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফল হবে সে প্রত্যাশা রইল।