শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
সেপ ব্ল্যাটারের আমলেই ৪৮ দলের বিশ্বকাপের প্রস্তাবটা উঠেছিল। তবে তার উত্তরসূরি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করেন বেশি। ৩২ থেকে ৪৮ দলের বিশ্বকাপের প্রস্তাবটি অবশেষে ফিফার কার্যকরী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন পেল। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ থেকেই ৪৮ দলের বিশাল বহরের এই টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়াবে।
গতকাল জুরিখে অনুষ্ঠিত ফিফার কার্যকরী কমিটির সভায় প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো নিজেই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। ৪৮ দলের বিশ্বকাপ নিয়ে নানা মতবাদ এবং বিতর্ক থাকলেও আজ ফিফা কংগ্রেসে সর্বসম্মতিক্রমেই অনুমোদন পেল প্রস্তাবটি। ৩২ দলের বিশ্বকাপে ৪টি করে দল নিয়ে মোট ৮টি গ্রুপ হতো। ৪৮ দলের বিশ্বকাপে ৩টি করে দল নিয়ে হবে মোট ১৬টি গ্রুপ।
প্রতি গ্রুপের তিন দলের মধ্যে দুটি করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সেরা দুটি করে দল উঠবে সেরা ৩২-এ। পরের রাউন্ড হবে নকআউট পর্বের। বর্তমান ফরম্যাটে নকআউট পর্ব অনুষ্ঠিত হয় সেরা ১৬টি দল নিয়ে। নতুন ফরম্যাটে হবে ৩২টি দল নিয়ে। নকআউটের প্রথম পর্ব থেকে দ্বিতীয় পর্বে উঠবে ১৬টি দল। সেখান থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল, এরপর সেমিফাইনাল এবং সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।
১৯৯৮ সালে ২৪ দল থেকে বিশ্বকাপকে উন্নীত করা হয় ৩২ দলে। বিশ্বকাপে খেলার জন্য বাছাই পর্ব পেরিয়ে এরপরই চূড়ান্ত পর্বে নাম লেখাতে হয়। স্বাগতিক দেশ সরাসরি খেলে চূড়ান্ত পর্ব। বাকি ৩১টি দলকে বাছাই পর্ব উৎরে আসতে হয়। ইউরোপ (উয়েফা) থেকে বাছাই পর্ব পার হয়ে ১৩টি, এশিয়া (এএফসি) থেকে ৪টি, সঙ্গে একটি প্লে-অফ। উত্তর, মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে ৩টি, সঙ্গে একপি প্লে-অফ, আফ্রিকা (সিএএফ) থেকে ৫টি, ওশেনিয়া (ওএফসি) থেকে একটি প্লে-অফ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৪টি এবং একটি প্লে-অফের মাধ্যমে মোট ৩১ দল নির্ধারণ করা হয়।
তবে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের জন্য বাছাই পদ্ধতি কী হবে, কোন অঞ্চল থেকে কতটি দেশ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে, সেটা এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপের কোটা ১৩ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৬টিতে। আফ্রিকা এবং এশিয়া থেকে নেয়া হতে পারে ৯টি করে দল। লাতিন আমেরিকা কিংবা অন্য অঞ্চলগুলো থেকে কয়টি দল নেয়া হবে সেটা এখনও নিশ্চিত নয়।
বাছাই পর্ব যেমনই হোক, নতুন ফরম্যাটের বিশ্বকাপে আসছে বেশ কিছু নতুনত্ব। গ্রুপ পর্বেই ফল নির্ধারণে ট্রাইব্রেকারের নিয়ম শুরু হতে পারে। এমনিতে ৩২ দলের বিশ্বকাপে ম্যাচ হতো মোট ৬৪টি। ৪৮ দলের বিশ্বকাপে ম্যাচ হবে মোট ৮০টি।
বিশ্বকাপের ম্যাচ বাড়লেও প্রতিটি দলের কিন্তু ম্যাচ বাড়ছে না। কারণ, যারা সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছায়, বর্তমান নিয়মে মোট ৭টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় তারা। নতুন ফরম্যাটেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠা দলগুলো ৭টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।
ফিফার কার্যকরী কমিটির সভায় কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। ফিফা কাউন্সিলের মোট ৩৭জন সদস্যের ওপর ন্যাস্ত ছিল বিশ্বকাপের নতুন ফরম্যাট বাছাই করে নেয়ার জন্য। যেখানে বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে ছিল ৪০ দলের বিশ্বকাপ। যেটা হবে ৪টি করে দল নিযে ১০ গ্রুপের, কিংবা ৫টি করে দল নিয়ে ৮ গ্রুপের। তবে ৪৮ দলের বিশ্বকাপকেই অনুমোদন দিয়েছে কাউন্সিল। যেখানে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে শুধু, ৩২ দলের নকআউট পর্বের বিষয়টি।-জাগোনিউজ