মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) ৩০ শতাংশ দাম বাড়াতে চাচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে রাজশাহী ওয়াসা। অনুমোদন পেলে তৃতীয় দফায় বাড়ানো হবে পানির দাম।
রাজশাহী ওয়াসা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। এর আগে ২০২২ সালে এক লাফে তিনগুন পানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তবে রাজশাহী ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দাবি, পানির দাম বাড়ানো হলেও পৌরসভারগুলোর চেয়েও কম দাম থাকবে পানির। প্রতি বছর লোকসানের কারণে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
রাজশাহী ওয়াসার তথ্যমতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আবাসিকে পানির দাম প্রতি ইউনিট নির্ধারণ করা হয় ৬ টাকা ৮১ পয়সা। বাণিজ্যিকে প্রতি ইউনিট করা হয়েছিল ১৩ টাকা ৬৬ পয়সা। থেকে ১৭ টাকা ৭০ পয়সা। ওয়াসার পাঠানো প্রস্তাবনায় পানির দাম ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আবাসিকে করা হয়েছে ৮ টাকা ৮৫ পয়সা ও বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ছাড়াও আবাসিকে আধা ইঞ্চি পাইপে একতলা ভবনের জন্য মাসে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৯৫ টাকা, ১০ তলা ভবনের জন্য ৮২৫ টাকার পরিবর্তে এক হাজার ৭৩ টাকা মূল্য ধরা হয়েছে। এক ইঞ্চি পাইপে একতলা ভবনে ৩৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৮৮ টাকা এবং ১০তলা ভবনে ২ হাজার ৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬৫১ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দ্বিতীয় থেকে নবম তলা পর্যন্ত কিংবা ১০তলার ওপরের তলার জন্য পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনগুন পানির দাম বাড়িয়েছিল রাজশাহী ওয়াসা। ফেব্রুয়ারির আগে আবাসিকে প্রতি ইউনিট পানির দাম ছিল ২ টাকা ২৭ পয়সা ছিল। তা বাড়িয়ে প্রতি হাজার লিটার ৬ দশমিক ৮১ টাকা করা হয়েছে। বাণিজ্যিকে পানির দাম ছিল ৪ টাকা ৫৪ পয়সা, তা বাড়িয়ে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা করা হয়। তার আগে ২০১৪ সালে পানির দাম বৃদ্ধি করে রাজশাহী ওয়াসা।
রাজশাহী ওয়াসার তথ্যমতে, সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এখন ১২৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে তা ৮৫৯ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে ওয়াসা। বর্তমানে ওয়াসার মোট পানির সংযোগ আছে ৪৯ হাজার ২৪৮টি। এর মধ্যে আবাসিক ৪৮ হাজার ৫২৭টি আর বাণিজ্যিক ৭২১টি। ওয়াসার ১ হাজার লিটার পানি উৎপাদন ও সরবরাহ করতে খরচ হয় ৯ টাকা ৩০ পয়সা। বছরে ২ দশমিক ৫৩ কিলোলিটার পানি বিক্রি করে ওয়াসা।
ওয়াসার কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, রাজশাহী নগরীতে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ লিটার। সংস্থাটি উৎপাদন করে ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার। প্রতিদিন ঘাটতি থাকে ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার। ওয়াসার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরে ২৩ কোটি ৫২ লাখ খরচ করে পানি উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫৫ কোটি লিটার পানি বিক্রি করেছে রাজশাহী ওয়াসা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয় করেছে ১৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
রাজশাহী ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) নাদিম সারোয়ার বলেন, পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনই তা বৃদ্ধি হচ্ছে না। দাম বৃদ্ধি হবে কি না তার সিদ্ধান্তও মন্ত্রণালয়ের। আমরা শুধু প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ৩০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ১৬ তম বোর্ড সভায়। সে বোর্ড সভায় দাম বৃদ্ধির বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছিল। অনুমোদন করার কারণ ছিল পানির উপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার।