রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
রাষ্ট্রপতি থাকাকালে রাডার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় যে সাক্ষীদের বক্তব্য শোনা হয়নি, তা শেষে করে ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণের বিষয়ে দুদকের একটি আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান।
আদেশের পর শহীদুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগপত্রে ৩৮ জন সাক্ষীর নাম থাকলেও ১২ জনের সাক্ষ্য নিয়ে মামলাটি যুক্তিতর্ক পর্যায়ে গিয়েছিল। যাদের সাক্ষ্য নেয়া হয়নি, তা নিতে অনুমতি দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৩১ মার্চের মধ্যে মামলার কার্যক্রম শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে।
ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিন কম্পানির রাডার কিনে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ অগাস্ট এরশাদসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে। আইনি বাধা কাটলে মামলা হওয়ার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৪ সালের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এরশাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দেন।
সেদিন অন্য দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। অন্য আসামি এ কে এম মুসা শুরু থেকেই পলাতক।
বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে ২০১৪ সালে ঢাকার তৎকালীন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুর রশীদ যুক্তিতর্ক শুনানি নিতে বিব্রত বোধ করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার জেলা জজ আদালতে বদলির কথা থাকলেও তা বদলি করা হয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
দুদক সেখানে পুনরায় সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন করলে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা গত ৮ নভেম্বর তা খারিজ করে দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক হাই কোর্টে এসে নিজেদের পক্ষে আদেশ পেল।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ এই মামলায় সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার দায় থেকে মুক্ত। মামলার ধার্য তারিখে তার আইনজীবীই তার পক্ষে হাজির থাকেন।- বিডিনিউজ