রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
বাবা-মার দু’জনের শারীরিক গঠন স্বাভাবিক এবং সাধারণ। তবে মা-বাবা দু’জনেই ভালো উচ্চতার এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। কিন্তু, তাঁদের সদ্যোজাত সন্তানের ওজন অস্বাভাবিক এবং অসাধারণ। বুধবার রাতে উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই মা তাঁর দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করেছেন। যার ওজন জন্মের সময় ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম। এটি তাঁদের একমাত্র পুত্র সন্তান। জন্মের পর থেকেই সন্তান ভালো এবং সুস্থ আছে। এর ৭ বছর আগে এই গৃহবধূ তাঁর প্রথম সন্তান প্রসব করেছিলেন। যার ওজন জন্মের সময় ছিল চার কেজি। সেই মেয়ে এখন প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। শারীরিক গঠন সহপাঠীদের তুলনায় ভালো। মেয়েও ভালো আছে, কোনও সমস্যা নেই। তবে কোনও সদ্যোজাতের ওজন ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম, এটা বিদেশে দেখা গেলেও ভারতবর্ষে খুব একটা দেখা যায় না।
বুধবার রাতে যে চিকিৎসকের হাতে গৃহবধূ মীনাক্ষী সাঁতরার এই পুত্র সন্তান প্রসব হয়েছে সেই চিকিৎসক সুমিতরঞ্জন প্রামাণিক এসএসকেএম হাসপাতাল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক তথা বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, বহু মায়ের সন্তান আমি প্রসব করিয়েছি। কিন্তু এত বড় অর্থাৎ ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের বাচ্চা আমি এই প্রথম দেখলাম। বাচ্চা এবং বাচ্চার মা ভালো এবং সুস্থ আছেন। এই বেসরকারি হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তিরঞ্জন গেঁর বলেন, মায়ের যদি সুগার বা ডায়াবেটিস থাকে তাহলে অনেক সময় বাচ্চার ওজন বেশি হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। মীনাক্ষীদেবীর কোনও সুগার বা ওই জাতীয় কোনও রোগ নেই। আমদের দেশে ৩৭ থেকে ৪১ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৭০০ গ্রাম থেকে ৩ কেজি ২০০ গ্রাম গড়পড়তা ওজন হয়। ৪ কেজি পর্যন্ত ওজনের বাচ্চাও কালেভদ্রে হয়। কিন্তু, ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম বাচ্চার ওজন এটা আমাদের দেশে খুব কমই হয়ে থাকে। অত্যন্ত আমরা দেখিনি। তাছাড়া বাচ্চার বাবা-মার শারীরিক উচ্চতা এবং ওজন ‘স্ট্যান্ডার্ড’। বিশাল লম্বা-চওড়া চেহারার কেউ নয়। তা সত্ত্বেও এত ওজনের বাচ্চা খুব একটা দেখা যায় না।
শ্যামপুর থানার খাড়াবেড়িয়ার বাসিন্দা সচ্ছল কৃষক পরিবারের সন্তান পুলক সাঁতরা এবং তাঁর স্ত্রী মীনাক্ষী সাঁতরার এটি দ্বিতীয় সন্তান। পুলকবাবু বলেন, প্রথম আমাদের মেয়ে হয়, যার বয়স এই ৭ বছরের পড়ল। সে প্রথম শ্রেণিতে স্থানীয় স্কুলে পড়ে। মেয়ের জন্মের সময় ওজন ছিল ৪ কেজি। এবার ছেলে হল তার ওজন ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম। পুলকবাবু জানান, তাঁর উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট, ওজন ৭৫ কেজি। আর তাঁর স্ত্রীর উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, ওজন ৭০ কেজি তো হবেই। এখন ভালোয় ভালোয় স্ত্রী সুস্থ হয়ে সন্তানসহ বাড়ি ফিরে আসুক এটাই পুলকবাবুর প্রার্থনা। মীনাক্ষীদেবী ওই বেসরকারি হাসপাতালে এখন সবার চোখে চোখে রয়েছেন। যতœআত্যির কোনও ত্রুটি নেই। এ নিয়ে ওই হাসপাতালে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে।- বর্তমান