শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
পাবনা প্রতিনিধি
মোবাইলে চ্যাটিং, সিগারেট ও গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে পাবনা জেলা স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির বেশকিছু শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ৭ম শ্রেণির কতিপয় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর পৌনে তিনটার দিকে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জেলা স্কুলের সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইলে চ্যাটিং, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে র্যাগিং, শিক্ষার্থীদের মারধর, বিদ্যালয় কক্ষ এবং টয়লেটে সিগারেট ও গাঁজা সেবন নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জের ধরে মঙ্গলবার টিফিনের শেষ মুহূর্তে ৭ম শ্রেণির ঘ শাখার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ৬ষ্ঠ শ্রেণির ঘ শাখার শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করে কমপক্ষে ১০/১৫ জন শিক্ষার্থীকে ব্লেড ও হাত দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে ও আতঙ্কে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছুটাছুটি শুরু করে। কেউ কেউ ভয়ে স্কুল থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, অনুসন্ধান করে এই ঘটনার সাথে নেতৃত্ব দেয়া ৪/৫ জনকে শনাক্ত করা হয়। শনাক্ত করা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে আনা হয়। দীর্ঘসময় বৈঠক করে পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা এ ধরনের ঘটনা আর ঘটাবে না মর্মে মুচলেকা দেয়ায় তাদের অভিভাবকের কাছে দিয়ে দেয়া হয়। কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই পাবনা জেলা স্কুলে এমন কর্মকাণ্ড চলে আসছে। একটি শিশু কিশোর গ্যাংকে বিদ্যালয় প্রশাসন দমনে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
পাবনা জেলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তুষার কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ’ঘটনার পরপরই আমি মারধরে নেতৃত্বে থাকা ৪/৫ জন ছাত্রকে শনাক্ত করে তাদের অভিভাবকদের খবর দেই। তারা আসার পর আলোচনা সাপেক্ষে মুচলেকা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক সেবন, র্যাগিংসহ নানা ঘটনার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তুষার কুমার দাস বলেন, ’আমি ১৫ মাস হলো এখানে যোগদান করেছি। তখন থেকে এমন অভিযোগ শুনে আসছি। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে এসব প্রতিহত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি ব্যর্থ হলে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ নিবো।’