অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম সরকার বাড়ায়নি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

তা হলে মূল্যবৃদ্ধি করলো কারা?

বাজারে ওষুধের দাম বাড়ছে। ওষুধ কম্পনিগুলো বলছে, দাম বৃদ্ধি যৌক্তিক। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন বলছে ওষুধের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকার কোনো অনুমোদন দেয় নি। তারপরও বাজারে জরুরি ওষুধের দাম বাড়তি। এ এক উদ্ভট পরিস্থিতি। কিন্তু মাঝখান থেকে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে বাড়তি দামে ওষুধ কিনতে।

যেসব ওষুধ না খেলে মানুষ মারা যেতে পারে, তেমন ১১৭টি ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। এমন দাবি করেছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ। তবে এর বাইরে ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করে কিছু ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হৃদরোগীদের স্ট্যান্টের দাম নিয়ে এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানান।

কিন্তু দেশের বাজারে সব ধরনের ওষুধের দাম বেড়েছে কমবেশি। মহাপরিচালক বলেছেন ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার আগে যা ঠিক করে রেখেছিল, সেগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে যেসব পণ্য আমরা বিদেশি থেকে আনি, সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সমন্বয় করা হয়েছে। তবে স্বাভাবিকভাবে বেশি বাড়তে দেয়া হয়নি। তাই যদি হবে তা হলে সব ওষুধের দাম বাড়ছে কীভাবে? কারাই বা বাড়াচ্ছে সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে? এই দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন- ক্যাব দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেছে।

উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়ায় দেশীয় ওষুধ কোম্পানি-গুলো সরকারের অনুমতি চায় ওষুধের দাম বাড়ানোর জন্য। ওষুধ শিল্প সমিতির নেতাদের দাবি, ডলার সংকট, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, এলসি জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় ওষুধের দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।

তবে এ সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওষুধের দাম বাড়ায়নি। ফলে টিকে থাকতে ওষুধের দাম বাড়াতে চায় দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো। ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানিয়েছন।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৩০৮ টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ তৈরি করে আসছে। দেশে দেড় হাজারেরও বেশি জরুরি ওষুধের ২৭ হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করা হয়েছে। এর-মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় ওষুধ আছে ২১৯ টি। তার মধ্য ১১৭ টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দেয়। অন্য সব ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে উৎপাদনকারী কম্পানিগুলো।

২০২২ সালে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত ৫৩টি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। তখন কিছু ওষুধের দাম ১৩ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিলো। তবে তাতেও ওষুধ কম্পানিগুলোর লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করছেন উদ্যোক্তারা।

১১৭ টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম বাজারে কীভাবে বর্ধিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সে ব্যাপারে নজরদারি হচ্ছে না বলেই ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

Exit mobile version