শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৃহস্পতিবার কোটা আন্দোলনকে ঘিরে রংপুরে নারকীয় তা-বে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে রংপুর জেলা, মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ফেল (ব্যর্থ) করেছেন। ওরা এসে অফিসে হামলা করলো, আগুন ধরিয়ে দিল আর আপনারা পকেটে হাত দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখলেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ওরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে মেরে ফেলবে। এখনই সাবধান হয়ে যান। দলের মধ্যে দুর্বলতাগুলো দূর করেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনার যথার্থই ঘটনার বিশ্লেষণ করেছেন। তবে এ সত্যটাও সামনে এসেছে যে, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামীলী যে ভেতর থেকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা খোদ দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বিভিন্ন বৈঠকে উল্লেখ করেছেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নানা দুর্বলতা বেরিয়ে এসেছে বলে স্বীকার করে নেন। শুধু রংপুর নয়- রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ দেশের সহিংস-সংঘটিত জেলাতেও এই দুর্বলতা সামনে এসেছে। যে দুর্বলতা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষদের জন্য উদ্বেগের কারণও বটে। এমন একটি পরিস্থিতির জন্য মোটেও প্রত্যাশিত নয়। কোটা আন্দোলনের নামে দুবৃত্তদল যে ধরনের ভয়াবহ তা-ব চালিয়েছে তা সাংগঠনিকভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতি খুবই অবাক করে যে, সাংগঠনিকভাবে সবল এতিহ্যবাহী আওয়ামীলীগ দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে, দেশের অনেক জেলা শহরে সন্ত্রাসীরা তা-ব চালাতে পারেনি। এটা সম্ভব হয়েছে সাংগঠনিক সবলতার জন্য। ওইসব জেলায় দুর্বৃত্তরা সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাতে পারেনি। বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও এখন পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারেনি। এর জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লির সদস্য ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নেতাকর্মিদের সাথে নিয়ে মাঠে ছিলেন। ফলে রাজশাহী মহানগরীতে দুর্বৃৃত্তরা কোনো ধরনের সংঘাত সৃষ্টি করার সুযোগ পায়নি।
এই সত্যের মুখোমুৃখি দাঁড়ানোর সময় এসেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের। সরকার দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অসাধারণ সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে। সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার্য হচ্ছে। সরকারের সাফল্যের সাথে সাথে রাজনৈতিক সক্ষমতাও জরুরি। নতুবা সরকারকে দুর্বল করতে দুর্বৃত্তচক্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সময় এসেছে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানও সক্ষমতা দেখাতে পারে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে তুলে দলকে শাক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। দলের নেতাকর্মিদের জনগণেরর সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার মানসিকতাও সৃষ্টি করতে হবে।