আদালতে মুখোমুখি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সাবেক পর্ন তারকা

আপডেট: মে ৮, ২০২৪, ২:৩৮ অপরাহ্ণ

পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস

সোনার দেশ ডেস্ক :


সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং স্টর্মি ড্যানিয়েলস একটি কথিত যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুনানি চলছে নিউইয়র্কের আদালতে।
এই মামলায় মঙ্গলবার (৭ মে) যখন মিজ ড্যানিয়েলস ও ট্রাম্পকে প্রথমবারের মতো আদালত মুখোমুখি করেন, তখন আদালত ও আশপাশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ঢিলেঢালা কালো পোশাকে, পিছনে চুল বেঁধে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস। ট্রাম্পের মুখোমুখি হলেও এসময় তাকে একবারও তাকাতে দেখা যায়নি সাবেক প্রেসিডেন্টের দিকে।
আদালতের কাঠগড়ায় তিনি যতক্ষণ ছিলেন, ততক্ষণ সেই যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা বর্ণনা করেছিলেন।

ট্রাম্প ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির ৩৪টি অপরাধমূলক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। এরমধ্যে একটি ছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ড্যানিয়েলসকে এক লাখ ত্রিশ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্টের আইনজীবী, সেই কারণে।

এই ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ড্যানিয়েলস, সেই সাথে ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন মিলনের কথাও অস্বীকার করেছেন তিনি। যদিও তার দাবি, তার মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেন তাকে টাকা দিয়েছিলেন।
ঘুষ গ্রহণ করার কারণে তাকে যে কোনো সময় আদালতে হাজির করা হতে পারে, এই ধারণা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু সব নাটকীয়তার জবাব মিললো মঙ্গলবার আদালতে তার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে।

আদালতে শুনানিতে তিনি ট্রাম্পের সাথে এই কেলেঙ্কারির ঘটনার মুহূর্তগুলো বর্ণনা করছিলেন। যদিও তখন ট্রাম্পের আইনজীবী বিষয়টিকে ভুল বলে দাবি করছিলেন আদালতে।
এই শুনানির সময় বিচারপতি হুয়ান মের্চান প্রসিকিউটরদের এ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য না চাওয়ার জন্য সতর্ক করেন।

দিনের শুরুতে ট্রাম্পের আইনজীবীরা ২০০৬ সালে ড্যানিয়েলসের কথিত যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে কী প্রশ্ন করা যেতে করতে পারে এ নিয়ে বিচারপতি মের্চানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ সময় প্রসিকিউশন বলেন, কেন ড্যানিয়েলকে অর্থ দেয়া হয়েছিলো কিংবা সেটির উদ্দেশ্য কী ছিল, সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা দরকার।
ড্যানিয়েলস ট্রাম্পের সাথে তার এই কথিত যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনাটি নিয়ে এই প্রথম আদালতে কথা বলেননি। এর আগেও এটি নিয়ে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে, টেলিভিশনে কথা বলেছেন।

দিনের শুরুতে আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর অনেকটা নার্ভাস দেখা যাচ্ছিলো তাকে। তিনি দ্রুত গতিতে কথা বলছিলেন। তখন আদালত তাকে ধীর স্থির হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলার জন্য অনুরোধ জানান। এই শুনানিতে প্রসিকিউটরা এমন কিছু প্রশ্ন করছিলেন, যাতে কিছুটা বিব্রত হন ড্যানিয়েলস। তখন বিচারক সতর্ক করেছিলেন প্রসিকিউশনকে।

এ সময় ড্যানিয়েলস আদালতে ২০০৬ সালের সেই ঘটনার বর্ণনা করে বলেন, তখন ট্রাম্পের সাথে একটি ডিনারের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অনুরোধ পেয়েছিলেন তিনি। ড্যানিয়েলস আদালতকে বলেন, তিনি প্রথমে ট্রাম্পের সাথে ডিনারে যোগ দিতে চাননি। কিন্তু ট্রাম্পের এক সহযোগী তাকে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করছিলো।

এরপর তিনি ট্রাম্পের স্যুটে ডিনারের সেই দিনের বর্ণনা দেন। যেখানে তিনি বলেন তিনি সিল্কের একটি পায়জামা পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেন।
মিজ ড্যানিয়েল আদালতকে বলেন, এরপর তিনি বাথরুমে গেলেন। বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন ট্রাম্প শুধুমাত্র একটি বক্সার শর্টস ও একটি টি শার্ট গায়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। পরে সেখানে ঘটে যাওয়া সেই যৌন মিলনের বর্ণনা দেন আদালতে।

ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা
ট্রাম্পের আইনজীবীরা ড্যানিয়েলসকে জেরা করার আগে প্রসিকিউটররা একাধিকবার আপত্তি তোলেন। তারা তখন বলেন ড্যানিয়েলসের সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। এটিকে একটি পক্ষপাতমূলক আচরণ বলেও বর্ণনা করেন তার আইনজীবীরা।

এ কারণে এই শুনানিতে ড্যানিয়েলসকে কয়েকবার থামানোর চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা।
তখন বিচারপতি মের্চান আদালতে বলেন, সাক্ষীকে নিয়ন্ত্রণ করা একটু কঠিন কাজ। তবে ঘটনা সংক্ষেপে বলার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ঘটনাগুলো যে এতো বিশদভাবে বলা হচ্ছে, তা অপ্রয়োজনীয়।
যদিও আদালতে শুনানির পরে মি. ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন যে তিনি মনে করেন, বিচার প্রক্রিয়া ভালোভাবে চলছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

 

Exit mobile version