আন্দোলনে সহিংসরূপ অনশ্চিয়তার শেষ কোথায়?

আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২৪, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেয়া চারদফার দাবি খুবই আকস্মিভাবে এক দফায় পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ সরকারের পদত্যাগের দাবি। দাবির পুরোটাই রাজনৈতিক। আন্দোলনের চরিত্র-বৈশিষ্ট্য আর ছাত্র আন্দোলনে মধ্যেই সীমিত রইল না। তা হলে এখন আন্দোলন পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি কী হবে? নেপথ্যের নেতৃত্বে যে বা যারাই থাকুক না কেন এখন পর্যন্ত কোটা বিরোধী আন্দোলনে সমন্বয়করাই নেতৃত্বে আছে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এখনও প্রত্যক্ষ নেতৃত্বের বাইরেই আছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, এর যৌক্তিক পরিণতিই বা কেমন হবে? রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন একটি আন্দোলন আত্মঘাতি হচ্ছে কী না সেটাও খুব বিবেচ্য হয়ে উঠেছে।
এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, আন্দোলনের মাঠে ছাত্রদের সামনে রেখে নেতৃত্বটা নেপথ্যের কোনো অবস্থান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এই নেতৃত্বের হস্তান্তরটা খুবই জটিল হবে। সেটা সামাল দেয়া না গেলে তা বুমেরাং হয়ে বিপর্যয় ডেকেও আনতে পারে। আর তেমনটি হলে তা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।
ইতোমধ্যেই আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠেছে। সরকার তাদের ভুলগুলো শুধরে ওঠার প্রয়াস চালাচ্ছে। আন্দোলনরত ছাত্রদেরই দাবির পক্ষেই তাদের অবস্থানের কথা জানাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন; একই সাথে তিনি আন্দোলনরত ছাত্র নেতৃত্বের সাথে সংলাপের আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু এ আহ্বান সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখাত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের পরপরই আন্দোলনের দাবির স্বরূপটাও দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। ৯ দফা দাবি থেকে হঠাৎ করেই আন্দোলনকারীরা সরে গিয়ে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এটা যে রাজনৈতিক ক্রমোদ্যোগের কৌশল থেকেই ‘এক দফা’-এর ঘোষণা এসেছে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না।
তবে উদ্বেগ উৎকণ্ঠাটা বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কী হয়, না হয়- এমনই উত্তেজনা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশকে নিয়ে, নিজেকে নিয়ে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ। রোববার প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার কথা ছিল রোববার কিন্তু সে উদ্যোগও বাতিল হয়েছে। ১১ আগস্ট পুনরায় এইচএসসি পরীক্ষা পুনরায় শুরু করা যাবে তাও অনিশ্চিত। কারফিউ পরিস্থিতি ক্রমেই শিথিল হয়ে আসছে, অফিস-আদালতে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসছে, সর্বোপরি দেশের অর্থনীতি আবারো ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল- এই মুহূর্তে দেশের অনিশ্চিত পরিস্থিতি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার আবহ সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতির শিগগিরই নিরসন হওয়া বাঞ্ছনীয়। সমাধানের পথ অন্বেষণই হবে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলময়। বিষয়টি জেদের হলে সর্বনাশই ত্বরান্বিত হবে- এটা কারোরই কাম্য হওয়া উচিৎ হবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ