আমলাদের কঠোর সমালোচনায় মুখর রাবি শিক্ষকরা

আপডেট: জুলাই ১১, ২০২৪, ৮:২৩ অপরাহ্ণ

আমলাদের কঠোর সমালোচনায় মুখর রাবি শিক্ষকরা

সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন রাবি শিক্ষকরা। ছবি: সোহাগ আলী

রাবি প্রতিবেদক:
আমলাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ১১তম দিনের মত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের পাশে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদানকালে আমলাদের এই সমালোচনা করেন শিক্ষকরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ.ন.ম ওয়াহিদ বলেন, বাংলাদেশ নামক যে রাষ্ট্রটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলো, ক্রমশ বাংলাদেশ রাষ্টযন্ত্রটি সেই (মুক্তিযুদ্ধের) চেতনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। সোনার বাংলা নির্মাণের যে প্রত্যয় এবং স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো, সুকৌশলে এবং বারবার এই ধরণের আমলাতান্ত্রিক কুটিলতায় তা ব্যর্থতার দিকে পর্যবসিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই ‘প্রত্যয় স্কিম’ এবং এটি শিক্ষকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই আন্দোলন করছি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে মুক্ত রাখার জন্য।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নামক এই রাষ্ট্রটি এখন আর রাজনীতিবীদরা পরিচালনা করেন না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বিষয়। এই রাষ্ট্র পরিচালনা করেন আমলারা। আপনারা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের গঠনের দিকে তাকান। একজন অর্থমন্ত্রী আছেন। উনি সাবেক আমলা। এবং তার অধীনস্থ যারা আছেন, প্রত্যেকে আমলা। সেই কারনেই আমরা দেখতে পায়, ২০২২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা করলেন যে, এটি (সর্বজনীন পেনশন) যাদের পেনশন নাই, শুধুমাত্র তাদের জন্য, তখন এটা চমৎকার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু সেটা কাজ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও সেটার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এবং তারা (আমলা) বলছেন, ‘স্বায়ত্তশাসিত আরো ৯০টা প্রতিষ্ঠানকেও এই স্কিমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তারাতো কিছু বলছেনা?’ এটাই জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তারা (আমলারা) বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাতারে ফেলে দিয়েছে।

এই অধ্যাপক বলেন, আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে মেধাবীদের আকৃষ্ট না করি, তাহলে কার ক্ষতি? এই মেধাবীরা কি দেশে থাকবে? অনেকেই চলে গিয়েছে, আরো যাবে। তখন দেশটা আর মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির বাংলাদেশ থাকবে না। এটাই আমলারা চান। কারণ ঔপনিবেশিক যে ভূত তাদের উপরে চেপে আছে, সেটার প্রেক্ষিতে এমন বাংলাদেশ হলে তারা লাভবান হবে। তার প্রমাণ আপনারা ইতোমধ্যে পেয়ে গেছেন বিস্তারিতভাবে। প্রতিদিনই আমরা সম্রাট শাহজাহানের মত কোটি কোটি টাকার সম্পদওয়ালাদের দেখতে পারছি।

রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, আমাদের ছোটোভাই প্রদীপ কুমার পান্ডে পিএসসিতে কাজ করছে। আরো যদি ৫ জনকে এখান থেকে (রাবি) পাঠায়, তাহলে পিএসসি পৃথিবীর মধ্যে সেরা প্রতিষ্ঠান হবে। পিএসসির ইতিহাসে যে সভাপতিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, তাদের কারো সময়ে কোনো দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যায়নি। যেদিন থেকে এটা আমলাদের হাতে গিয়েছে, সেদিন থেকে এটার অবস্থা শেষ! এটা আমার তথ্য না, মিডিয়াতেই এসেছে। পিএসসির কর্তৃপক্ষদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যত বেশি হবে, তত এটি স্বচ্ছ হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ