আমেরিকা শক্তি হারাচ্ছে

আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ

সময়ের দায় এড়ানো যায় না!

সময় সত্যাসত্য বিচার করে এবং তা যথার্থই করে। আজ যে পরাক্রমশালী, আগামীতে তাই দুর্বল-অথর্ব হয়ে যায়। ইতিহাস সেই সত্যাসত্যের সাক্ষী হয়। পরাক্রমশালী মোগল সাম্রাজ্যের অবসান হয়েছে, ভারতবর্ষে একচ্ছত্র ব্রিটিশ শাসন ও আধিপত্যেরও শেষ হয়েছে। ৫শো বছরের মধ্যেই এ দুটি শাসন অধ্যায়ের অবসান হয়েছে। সর্বক্ষেত্রের শক্তি ও শাসনের উদ্ভব হয়েছে, একই সাথে কালের পরিক্রমায় তার অবসানও হয়েছে। বিশ্বের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে শক্তি-সামর্থের ক্ষয়িষ্ণু যাত্রার শুরু হয়েছে।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তেমনই আভাস দেয়া হয়েছে। সংস্থাটি জানাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব। আন্তঃদেশীয় চ্যালেঞ্জ ও আঞ্চলিক সংঘাত এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যবস্থায় আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর পেছনে চিন, রাশিয়া ও ইরানের মতো শক্তিধর কয়েকটি রাষ্ট্রের নাম জড়িয়েছে। বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়া যখন যুদ্ধে লিপ্ত, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সহায়তা দিয়ে মস্কোর পাশে দাঁড়াচ্ছে চিন। রাশিয়া ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ছে। রাশিয়ায় সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে, চিন থেকে এরকম সব পণ্যের রপ্তানি ২০২২ সাল থেকে তিন গুণ বেড়েছে।

কথায় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যার বন্ধু তার আর শত্রুর প্রয়োজন পড়ে না। বিশ্বের দেশসমূহের একটি অংশ সারা পৃথিবীতে সন্ত্রাস-সহিংসতা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই মূলত দায়ি করে। দেশটি বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত। বিংশ শতাব্দির পুরোটা জুড়েই দেশে দেশে সামরিক ক্যু ও রক্তপাতের দায় আমেরিকার ওপরই বর্তানো হয়। সারা বিশ্বে অস্থিরতা ও যুদ্ধ-বিগ্রহ বজায় থাকলে আমেরিকার অর্থনীতি ও শক্তি মজবুত হয়। অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে প্রায় একচ্ছত্র নেতৃত্ব বজায় রেখেছে দেশটি।

উন্নয়নশীল ও উন্নয়নকামী দেশসমূহের সম্পদ লুণ্ঠনের ক্ষেত্রেও আমেরিকার ভূমিকার কথা বলা হয়। এসব বিষয় এখন পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশের কাছে অজানা কিছু নয়। সেই সাথে দেশে দেশে মানুষের স্বাধীন সত্তাও বিকশিত হচ্ছে। আমেরিকার দুরভিসন্ধির কূটনীতি এখন আর কারো অজানা নয়। ফলে আমেরিকা আস্থার সঙ্কটের মুখে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। আস্থাহীনতা এমন একটি অভীধা যা ধীরে ধীরৈ পরাক্রমশালীকে দুর্বল করে দেয়। আমেরিকা সেই অস্তমিত অধ্যায়ের দিকেই যাচ্ছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

Exit mobile version