আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের ৯৯তম বার্ষিক সন্মেলন সমাপ্ত

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১:৩৯ অপরাহ্ণ


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :নিজেদের নৈতিকতার মান উন্নয়ন, দেশ সেবা এবং মানবতার কল্যাণে কাজ করার ব্রত নিয়ে শেষ হলো আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের ৯৯তম সালানা জলসা বা বার্ষিক সন্মেলন। পঞ্চগড় শহরের উপকণ্ঠে আহমদনগরে নিজস্ব দেয়াল ঘেরা মাঠে অনুষ্ঠিত এই সন্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রতিনিধিগণ যোগদান করেন।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌণে ১০ টায় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা এবং দোয়ার মাধ্যমে জলসার কার্যক্রম শুরু হয়। জলসার উদ্বোধনী ভাষণে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত, বাংলাদেশ এর ন্যাশন্যাল আমীর আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী বলেন, আমাদের জলসা কোনো সাধারণ সন্মেলন নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক সমাবেশ যেখানে আমাদের সদস্যগণ তিন দিন অবস্থান করে বাজামাত নামায তাহাজ্জুদ এবং ওয়াক্তিয়া নামাযগুলো আদায় করার পাশাপাশি ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করে থাকেন।

পবিত্র কোরআন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুপম শিক্ষা এবং নির্দেশনার আলোকে নিজেদের জীবনকে গড়ে তোলার পথনির্দেশনা পেয়ে থাকেন। আমাদের সদস্যরা বছরের এ ক’টি দিনের জন্য সারা বছরব্যাপী অপেক্ষায় থাকেন। আমাদের জলসা সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিগত বছরের বিয়োগান্ত দুঃখজনক ঘটনার উল্লেখ করে ন্যাশন্যাল আমীর বলেন, বিরোধিতা সত্য জামা’তের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।

আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বিগত একশ’ পঁয়ত্রিশ বছরের ইতিহাস এ স্বাক্ষ্য বহন করে যে, বিরোধিতা এবং অত্যাচার আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারে নি বরং আল্লাহতালার অসীম সাহায্য এবং কল্যাণে দিন দিন এই জামা’ত বৃদ্ধি প্রাপ্ত হচ্ছে এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে বিশ্বের ২২০ টি দেশে এই জামা’ত সুপ্রতিষ্ঠিত।

জলসার ৫ টি অধিবেশনে বিভিন্ন বক্তাগণ আল্লাহতালার অস্তিত্ব, দোয়ার গুরুত্ব ও কবুলিয়ত, মহানবী (সাঃ) এবং পবিত্র কুরআনের এর অতুলনীয় শান ও মর্যাদা, মানব সেবা, দেশপ্রেম, পারিবারিক ও সামাজিক কল্যাণ, আর্থিক কুরবানী, বিশ্বশান্তি, সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য প্রদান করেন। জলসায় বিগত বছর উগ্র ধর্মান্ধদের আক্রমণে শাহাদাত বরনকারী শহীদ প্রকৌশলী জাহিদ হাসানের পিতা জনাব আবু বকর সিদ্দিক সন্তানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য প্রদান করেন।

এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জলসা অনুষ্ঠানের বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত সরকার ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে। তবে আগামীতে সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং নানা মত ও পথের অনুসারীদের পরমতসহিষ্ণু ও সম্প্রীতিময় সহাবস্থানের মাধ্যমে জলসা অনুষ্ঠানসহ প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করার বিষয়ে পরিবেশ সৃষ্টির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে।

স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি এবং কর্মদিবসে জলসা অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারের উপস্থিতি নিয়ে সঙ্কা ছিলো, তথাপি আমাদের সদস্যগণ প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যায় অংশ গ্রহণ করেন, আলহামদুলিল্লাহ। ন্যাশন্যাল আমীর ১৫ ফেব্রুয়ারি ফজর নামাযের পর সমাপ্তি ভাষণ ও সম্মিলিত দোয়ার মাধ্যমে জলসার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। দেশের অব্যাহত উন্নতি ও কল্যাণ, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের শান্তি ও নিরাপত্তা, যুদ্ধ আক্রান্ত বিভিন্ন দেশসহ সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে দোয়া করা হয়। তাহাজ্জুদের নামাযের সময় কানায় কানায় পরিপূর্ণ জলসা মার্কীতে এক অভূতপূর্ব আধ্যাত্মিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ