শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:
আপন বোনের বাড়ি নিজের দখলে নিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা বাড়ির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বড় ভাই। একই সঙ্গে বোনের স্বামী এ.এন. রাশেদ-উশ-শানকে পিটিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত ২০ দিন ধরে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন বাড়িটির ভাড়াটিয়ারা। এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহনের দাবীতে অবৈধ দখলদার বড় ভাই আবুল তালহা বিটনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের পূর্ব টেংরী শেরশাহ রোড সংলগ্ন নিজ বাড়িতে জনকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভূক্তভোগি রুমানা ইসলাম সানির স্বামী এ.এন. রাশেদ -উশ-শান।
লিখিত বক্তব্যে এ.এন. রাশেদ -উশ-শান জানান, বাবা নুরুল ইসলামের মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণ বাড়িসহ জমি বিক্রয়ের ঘোষণা দেন। তখন পারিবারিক সিদ্ধান্তে ২০১৬ সালে তিনি শ্বশুড়ের বাড়িসহ জমি, স্ত্রীর এক ভাই ও দুই বোনের নিকট থেকে ক্রয় করেন। তিনি ব্যবসা জনিত কারণে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। এইজন্য বাড়িসহ জমি দেখাশোনার করার জন্য স্ত্রীর অপর ভাই আবু তালহা বিটনকে দায়িত্ব প্রদান করেন। বিটন পরিবার নিয়ে বাড়ির দোতলায় বাস করেন। আর নিচের অংশসহ জমির অন্য অংশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করছেন। বিগত সাড়ে ৪ বছরে আনুমানিক ৪২ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করে আত্মসাত করেন বিটন। টাকার হিসাব চাওয়ার পর থেকেই বিটন ও তার স্ত্রী তাদের সঙ্গে অশালিন আচরণ শুরু করেন। এরপর করোনা মহামারির পর ২০২১ সালে স্ত্রী রুমানা ইসলাম সানি ও ছেলেমেয়েসহ নিয়ে ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীর বাড়িতে আসেন।
কিন্তু বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক আবু তালহা বিটন বাড়িটি নিজের দাবী করেন। এক পর্যায় বিটন ও তার স্ত্রী পপি তাদের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ বাধান। প্রাণনাশসহ নানা রকম হুমকি ধামকি প্রদান করায় নিজের বাড়িতে উঠতে না পেরে শহরের পশ্চিম টেংরী বাবুপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়েছেন। ঢাকা থেকে সেই বাসাতেই যাতায়াত করেন।
রাশেদ জানান, এরপর বাড়ি ও জমি দখল ও সীমানা প্রাচির নির্ধারনের জন্য কয়েক দফা ঈশ্বরদী পৌরসভায় আবেদন করা হয়। জমি পরিমাপের সময় আবু তালহা বিটন জমি পরিমাপের দিন কৌশলে অনুপস্থিত থাকেন। অবশেষ পৌরসভায় পূন আবেদনের কারণে গত ২২ আগষ্ট পৌরসভার শালিস বোর্ড মেয়রের আদেশে পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবুল হাশেম, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মোঃ আব্দুল লতিফ মিন্টুসহ অন্যান্য কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতিতে জমিটি পরিমাপ করেন। সেখানে ক্রয়কৃত জমির দলিল দেখে শালিস বোর্ড জমির সীমানা নির্ধারণ করে বুঝিয়ে দেন। এরপর বাড়িটির নিচ তলায় সবজু এক্সেসরিজ লিঃ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীক অফিস খোলা হয়।
একই সঙ্গে বাড়িটি দেখাশোনার জন্য বাপ্পি নামের একজনকে পরিবার নিয়ে বসবাস করতে দেওয়া হয়। আর মানবিক কারণে আবু তালহা বিটনকে বাড়ির উপর তলায় থাকতে দেওয়া হয়। সম্প্রতি তার অনুপস্থিতিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবুজ এক্সেসরিজ কার্যালয়ে আবু তালহা বিটন হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ২০ দিন ধরে বাড়িটি পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসহীন অবস্থায় রয়েছে। বাসার লোকজন মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ ব্যাপারে আবু তালহা বিটন জানান, জমিতে আমার অংশ রয়েছে। তিনি পারিবারিক সিদ্ধান্তে বাড়ি ও জমি বিক্রয়ের বিরুদ্ধে আদালতে বাটোয়ারা মামলা চলমান রয়েছে। বিটন আরও জানান, বিষয়টি পাবনার আওয়ামীলীগ নেতা কামিল হোসেন দেখভাল করছেন। তিনি যেভাবে বলবেন সেই ভাবেই কাজ করা হবে।