উত্তরপ্রদেশে পদপিষ্ট হয়ে ১১৬ জনের মৃত্যু

আপডেট: জুলাই ২, ২০২৪, ৭:২২ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক:


ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মৃত্যুমিছিল! ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ভিড়ের চাপে কমপক্ষে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক ভক্ত। অনুষ্ঠান শেষ হতেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। পদপিষ্ট হন অসংখ্য মানুষ। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ভিড়ের চাপে প্রাণ হারিয়েছেন নারী ও শিশুরাও।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজ্যের হাতরাস জেলায় ‘শিব স্মরণে’ ভোলে বাবার এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন ভোলে বাবা নিজেই। মূলত তার ভাষণ শুনতেই ভক্তরা সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।

ভারতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদচাপায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১১৬ জনের মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল উত্তর প্রদেশের হাথরসে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার হাথরসের একটি গ্রামে ‘সৎসঙ্গ’ (প্রার্থনাসভা) ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সেই অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিল।

অনুষ্ঠান শেষ হতেই পুণ্যার্থীদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খান কর্মকর্তারাও।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এক নারী বলেন, স্থানীয় এক গুরুর সম্মানে ওই প্রার্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। লোকজন বিদায় নেওয়ার সময়েই ঘটে পদপিষ্টের ঘটনা।

আরেক নারী বলেন, ‘সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরই পদচাপার ঘটনা ঘটে। আমরা পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়।”
ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সরকারের একাধিক মন্ত্রীও ঘটনাস্থলে যান। কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে বাস এবং টেম্পুতে করে কয়েকটি লাশ নিয়ে আসা এবং স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে।

হাথরসের ডিস্ট্রিক্ট মেজিস্ট্রেট আশিষ কুমার বলেছেন, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার থেকে মৃতের সংখ্যার যে হিসাব পাওয়া গেছে তাতে বলা হয়েছে ৫০-৬০ জন নিহত হয়েছে। আর ইতাহ জেলার কর্মকর্তারা আরও ২৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন।
পরে সন্ধ্যায় ইন্সপেক্টর জেনারেল সালাবাহ মথুর জানান, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
পদচাপার ঘটনাটি হাথরসের সিকন্দরারাউ পুলিশ স্টেশনের অধীন পুরালি গ্রামে ঘটেছে। আহতদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আশিষ কুমার।

এনডিটিভি জানায়, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোটা ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং পরিস্থিতি নজরে রাখছেন। কীভাবে এত বড় ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্ত দল।

ওদিকে পার্লামেন্টের ভাষণে হাথরসের ঘটনার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “হাথরসের ঘটনায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। জখমদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।” প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মূ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
পদচাপার এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর যে হাথরাসের এক দলিত কিশোরীর দলগতধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ, সংবাদ প্রতিদিন অনলাইন

Exit mobile version