সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
নগরীর নওদাপাড়া এলাকার নগর মাতৃসদন থেকে চুরি হওয়া নবজাতক ঘটনার দুইদিন পরও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। জন্মের ৬ ঘণ্টা পর গত বৃহস্পতিবার রাতে চুরির ঘটনা ঘটে। তবে এখনও পর্যন্ত নবজাতকটি উদ্ধার না হওয়ায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার মা মুক্তি খাতুন (১৮)।
এদিকে নবজাতক চুরির ঘটনায় মুক্তি খাতুনের মা রোজিনা খাতুন বাদি হয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় নগরীর ডাশমারি এলাকার তোহুরা খাতুন নামে এক নারীকে গ্রেফতার করে। তহুরা নগর মাতৃসদনের স্বাস্থ্যকর্মী।
শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, বাচ্চাটি অচেনা এক নারী চুরি করেছেন, যার সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী তহুরা খাতুনের পরিচয় আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাচ্চার সন্ধান মিলতে পারে। তাই আদালতে তহুরার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রোববার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা এখনও বাচ্চাটিকে উদ্ধার করতে পারিনি। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। চেষ্টার অংশ হিসেবে শুক্রবার রাতে আমরা ওই মাতৃসদনের একজন নার্সকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে তার কাছে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তহুরাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আমাদের কাজ কিছুটা সহজ হতে পারে।’
নিজের নবজাতককে হারানোর পর নগরীর চরশ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দীনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন জানিয়েছিলেন, তার গর্ভাবস্থায় ডাশমারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠকর্মী তহুরা বেগম দুইবার তার বাসায় গেছেন। একবার ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সি একজন অচেনা নারীকে সঙ্গে করে নিয়ে যান। তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তহুরা বলেছিলেন, ওই নারী বিদেশি এক প্রকল্পে কাজ করেন। বিদেশি প্রকল্প থেকে তিনি অন্তসত্ত্বা মায়েদের আর্থিক সহায়তা দেন। তাকেও সহায়তা করবেন।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তহুরা ও অজ্ঞাত ওই নারী তাকে নওদাপাড়া এলাকায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি) নামের একটি এনজিও পরিচালিত এই নগর মাতৃসদনে ভর্তি করেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তার ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। শুরু থেকেই তহুরা তার সঙ্গে ছিলেন। ওই অচেনা নারী তার চিকিৎসার খরচ বাবদ তিন হাজার টাকা দেন। এ ছাড়া বাচ্চার জন্য একটি তোয়ালে, কম্বল ও নতুন পোশাক কিনে দেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কৌশলে ওই নারী বাচ্চাটি নিয়ে পালিয়ে যান।