সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
পাবনা প্রতিনিধি:
ঋণ খেলাপী মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসা পাবনার ঈশ^রদীর সেই ৩৭ কৃষক তাদের সুদসহ ঋণের বাকি টাকা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য কৃষকদের পক্ষে সভানেত্রী স্থানীয় ইউপি সদস্য বিলবিস নাহার এ সংক্রান্ত আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড ঢাকার ম্যানেজার বরাবর একটি আবেদনপত্র ব্যাংকটির পাবনা শাখায় জমা দেন। এ সময় পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কাজী জসিম উদ্দিন তার আবেদনপত্র গ্রহণ করেন।
আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, ‘আমরা সাধারণ ৪০ জন কৃষক বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড থেকে ১৬ লাখ টাকা ঋণ সুদসহ গ্রহণ করেছিলাম। আমরা কৃষকগণ ইতিপূর্বে প্রায় ১৩ লাখ টাকা সুদ সহ পরিশোধ করেছি। আমাদের ৪০ জন কৃষকের মধ্যে ৩৭ জনের নামে ঋণ ও ঋণের সুদের মামলা হয়েছে। দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে আমরা সাধারণ কৃষক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমাদের পক্ষে ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ঋণ ও ঋণের সুদের টাকা মওকুফ এবং মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করছি।’
এ বিষয়ে কৃষকদের পক্ষে আবেদনকারী ইউপি সদস্য বিলকিস নাহার বলেন, ঋণ পরিশোধ ও মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছি। দ্রুত যেন এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং আমাদের ঋণ ও সুদ থেকে মওকুফ করে মামলা প্রত্যাহার করে নেন। তাহলে কৃষকরা হয়রানী থেকে বাঁচবেন।
পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কাজী জসিম উদ্দিন বলেন, ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভানেত্রীর আবেদনপত্রটি পাবার সাথে সাথে আমি মেইলে সমবায় ব্যাংকের ঢাকার মহাব্যবস্থাপক বরাবর পাঠিয়েছি। এখন তারা এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঈশ^রদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ৪০ জন কৃষক ওই সমিতির নামে দলগত ঋণ হিসেবে ১৬ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এর মধ্যে কেউ ২৫ হাজার, কেউ ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ পান। দীর্ঘদিনেও সেই ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে ৩৭ জন কৃষকের নামে মামলা করে ব্যাংকটি। সম্প্রতি আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করলে গত শুক্রবার ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত রোববার (২৭ নভেম্বর) পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার ১২ কৃষক সহ ৩৭ জন কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেন।