কর্মস্থলে নারীর সুরক্ষা

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ

নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

দেশের সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারী ক্ষমতায়নে আরও উত্তোরত্তর সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশ। কর্মস্থলে নারীর ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিতে ২০০৯ সালে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করেন হাইকোর্ট। যা হাইকোর্ট ডিরেক্টিভস ২০০৯ নামে পরিচিত। নারীর সুরক্ষার প্রশ্নে এ নির্দেশনা মাইলফলক। যদিও বিভাগীয় শহর রাজশাহীর কর্মক্ষেত্রে এ নির্দেশনা উপেক্ষিত থাকছে। এ বিষয়ে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

সম্প্রতি সোনার দেশে ‘রাজশাহী মেডিকেলে নারীর সুরক্ষা কতটুকু?’ শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে বিভাগীয় শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নারীর সুরক্ষার বেহাল চিত্র উঠে এসেছে।

একটি বিভাগীয় শহরের সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য নারী কর্মচারীদের সুরক্ষায় এখনও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কোনো কমিটি না থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। পূর্বে যে ঘটনাগুলো গণমাধ্যমে উঠে এসেছে সেখানেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার বিষয়টিও উদ্বেগের। কারণ এতে করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েও পার পেয়ে যায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। এছাড়া সৌন্দর্যহানির অজুহাতে রোগীদের অভিযোগ বক্স অপসারণও অযৌক্তিক।

প্রতিবেদনে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন নারীরা ভাষ্যগুলোও উদ্বেগের। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক ইন্টার্ন নারী নার্সের বক্তব্য শিহরিত করার মতো। যৌন হয়রানির অফিযোগ পাওয়ার পর ব্যবস্থা না নিয়ে ভুক্তভোগীকে চুপ থাকতে বলা পরোক্ষভাবে একটিকে সমর্থন দেয়ারই নামান্তর। এছাড়া ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি অভিযোগ পাওয়ার পরেও সে অভিযোগ আমলে না নেয়ার মানসিকতাও উদ্বেগের।
প্রতিবেদনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের বক্তব্যও এটা প্রমাণ করে যে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদাসীন। আবার যৌন হয়রানির শিকার নারীকে তার নায্য বিচারে সহযোগিতা না করে কৌশল খাটিয়ে চুপ রাখার মতো ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।

নিয়ম অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ সদস্যের নির্যাতন প্রতিরোধী কমিটি থাকার কথা। যেখানে সভাপতি ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং কমিটিতে অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী থাকবেন। এ কমিটিতে মানবাধিকার কর্মীও থাকতে হবে। এমন একটি কমিটি থাকলে ওই প্রতিষ্ঠানে নারী সুরক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সুতরাং অচিরেই এই কমিটি গঠন ও কার্যকরভাবে তা পরিচালনার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন একধাপ এগিয়ে যাবে। কর্মক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে সমৃদ্ধ হবে দেশ ও জাতি।

Exit mobile version