শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
এমদাদুল হক দুলু বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় গরু ছাগলের অন্যতম চারণভূমি এখন প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এতিহাসিক হলুদ বিহার। বিহারের উপর গো-ছাগলের মলমূত্রে বসার জায়গা অপরিস্কার হয়ে পড়েছে। বিশ^ ঐতিহ্যের প্রাচীন নিদর্শনের আলোচিত এক নাম ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার।
পাহাড়পুরের অদূরে অবস্থানরত আরো একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হচ্ছে ঐতিহাসিক হলুদবিহার। হলুদ বিহার বিহারের নিচে জায়গা জমি দিনে দিনে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ দখলের কারণে দর্শনার্থীরা বিহারের উপর উঠতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। এমন কি বিহারে উঠার রাস্তা পর্যন্ত দখল হয়ে গেছে।
পাহাড়পুর দেশ বিদেশ থেকে দর্শনার্থী, পর্যটন ঘুরতে এসে তাদের দৃষ্টিকাড়ে হলুদ বিহারের উপর। দর্শনার্থীরা ঘুরতে এসে হলুদবিহার দেখে হতবাক হয়ে পড়েন। এখানে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন সরকারি জনবল নেই। বিহারের জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে। বিহারটি যেন গো ছাগল চরানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। পাহাড়পুরের সমসাময়িক সময়ে নির্মিত হলুদবিহার বিশ^ ঐতিহ্যের সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় অস্তিÍত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহাসিক হলুদবিহার। এলাকাবাসী জানায় হলুদ বিহারের প্রত্নতাত্ত্বিক এরিয়া থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে বিহারটির সুরক্ষা বেষ্টনী তৈরি করতে হবে। দেখাশোনার জন্য জনবল রাখতে হবে। সেই সাথে পুনঃসংস্কার করতে হবে।
বিহারের উত্তর দিকে ফাঁকা মালিকানা জায়গা রয়েছে। ফাঁকা জায়গা জমি অধিগ্রহণ করে এখানে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো গড়ে তুললে বিহারের তিনগুন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। তথ্য সংগ্রহকালে কয়েকজন দর্শনার্থী জানান আমরা পাহাড়পুরে এসেছিলাম সেখান থেকে হলুদ বিহার।
হলুদ বিহার যে এতো অবহেলিত এটা দুঃখজনক। কারণ হিসাবে তারা বলেন, দেশে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। সে তুলনায় সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে বিনোদনের জায়গা। বিহারের উত্তর পাশে ফাঁকা জায়গা যদি মালিকানা হয় তাহলে অধিগ্রহণ করে নিয়ে হলুদ বিহার পর্যটন আকারে গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রাচীন এই নিদর্শনের অস্তিত্ব সুরক্ষা পাবে।
এতে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে, দোকানপাট বাড়বে এবং রাজস্ব পাবে সরকার। স্থানীয় লোকজন বলেন, হলুদ বিহারের জায়গা বেদখল বা এর সৌন্দর্য নষ্টের জন্য দায়ি কর্তৃপক্ষ নিজেই। বারবার কর্তৃপক্ষের কর্তা ব্যক্তিরা হলুদ বিহার দেখতে এসে ঘোষণা করেন সুরক্ষা বেষ্টনী নির্মাণের কিন্তু বাস্তবে তাঁদের কোন উদ্যোগ দেখা যায় না। এখানে কোন জনবল নেই জন্যই দিনের পর দিন এই বিহার অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে।
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার কাস্টোডিয়ান জানান হলুদ বিহারের অবৈধ দখল উচ্ছেদে বার বার উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন সহযোগিতা পাইনি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছা. নাহিদ সুলতানাকে বা বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেন নি।