গর্ভপাতে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

আপডেট: আগস্ট ৪, ২০১৭, ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


গর্ভপাতে রাজি না হওয়ায় স্বামী ও তার সহযোগীদের ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন যশোরের এক নারী।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করে যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে অভয়নগর থানা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফারও রয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সাইফার ঘটনাটি সরেজমিন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। মা আর ঘটনার দুইজন প্রত্যক্ষদর্শীকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ওই নারী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর অভয়নগরের আবাসিক হোটেল ‘আল সেলিমের’ মালিক জনি সরদারের (২৫) সঙ্গে প্রেমের সূত্রে গোপনে তার বিয়ে হয়। সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি তিনি স্বামী জনিকে জানান। “বিষয়টি জনিকে জানালে সে গর্ভপাতের কথা বলে। কিন্তু আমি রাজি হইনি।” এ নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, গত ৭ জুলাই অভয়নগর থানা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফার মীমাংসার কথা বলে ‘আল সেলিম’ হোটেলে তাকে ডেকে নেয়। সে সময় হোটেলে সাইফার ও জনি ছাড়াও সুমন, আজিম ও রুবেল নামে আরও তিনজন ছিলেন জানিয়ে অভিযোগকারী নারী বলেন, সেখানে সাইফারও তাকে গর্ভপাত করানোর কথা বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় হোটেলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে পাঁচজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন ওই তরুণী। এ ঘটনায় ২৫ জুলাই যশোর নারী ও শিশু নির‌্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনি ওই পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। ওই নারীর অভিযোগ, মামলার পর তিনি অভয়নগর যেতে পারছেন না, সাইফারের লোকজন নানাভাবে তাকে হুমকি দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ওই নারীর সঙ্গে থাকা মারুফ শেখ ও সেলিম মল্লিক নামের দুইজন সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন। মারুফ শেখ বলেন, ওই হোটেলের পাশে তার মুদি ও কাঁচামালের দোকান।৭ জুলাই দুপুরে কান্নার শব্দ শুনে হোটেলের দোতলায় উঠে তিনি দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা খুলে গেলে সেখানে ওই নারী এবং মামলার পাঁচ আসামিকে দেখেন। “বিষয়টি আমি দেখে ফেলায় জনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। পরে আমি কথা বলে (ওই তরুণীর সঙ্গে) বিষয়টি জানতে পারি।” স্থানীয় নওয়াপাড়া ঘাটের শ্রমিক সেলিম মল্লিকও একই রকম বক্তব্য দেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক যুবলীগ নেতা শেখ সাইফার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি দীর্ঘ ৪১ বছর রাজনীতি করি। আমার বর্তমান বয়স ৫৭। ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুতেই জড়িত ছিলাম।” তিনি বলেন, “জনি অনেক ছোট, তার সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ভাবা যায় না। গতকালও (বুধবার) পিবিআই, গোয়েন্দা দল এলাকায় এসেছে। আমাকেও তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।” সাইফারের ভাষ্য, অভয়নগর থানায় দীর্ঘ আড়াই বছর আওয়ামী লীগের কমিটি নেই। এই সুযোগে তার ‘প্রতিপক্ষ’ তাকে ঘায়েল করতেই এই ‘নোংরা অভিযোগ’ করাচ্ছে ওই তরুণীকে দিয়ে। অভিযোগকারী তরুণীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। ওই তরুণীর স্বামী জনির বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তের বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মতিন বলেন, “শিগগিরই ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।”

অভিযোগকারীকে এলাকায় যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে- এমন কোনো অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।-বিডিনিউজ