শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
চারঘাট ও বাঘা প্রতিনিধি
আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) থেকে মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ একটানা ২২ দিন পদ্মায় জেলেরা মাছ শিকার করতে পারবে না। সেই লক্ষ্যে সরকারীভাবে কার্ডধারী জেলেদের দেওয়া হয়েছে ২৫ কেজি করে চাল।
চারঘাটের কার্ডধারী মৎস্যজীবী মামুন ইসলাম বলেন, এই ২২ দিন ইলিশের প্রজননের জন্য মাছ ধরা সরকারিভাবে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। এই নিষেধজ্ঞার সময়ে পদ্মা নদীতে মাছ ধরা যাবে না। তাই মৎস্য অধিদপ্তর বা সরকারী অনুদান হিসেবে ২৫ কেজি চাল পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, পদ্মা নদীতে শুধুমাত্র মাছ শিকার করে যে সকল জেলেরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে তালিকা অনুযায়ী তাদের এই চাল দেওয়া হয়েছে। বাঘা উপজেলায় তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৩০৫ জন জেলের মধ্যে চাল পেয়েছেন ৭৫৫ জন জেলে। তাদের প্রত্যেককে ২৫ কেজি চাল দেয়া হয়। এছাড়া চারঘাট উপজেলায় তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছে ৫৭০ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। এরআগে শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে বাঘা উপজেলার গড়গড়ি, চকরাজাপুর, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, বাঘা পৌরসভা এলাকার জেলেকে গড়গড়ি বাজারে চাল দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাহাদুল ইসলাম বলেন, ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন ইলিশের প্রজনন কাল। এ সময় ডিম ছাড়ার জন্য মা ইলিশ গভীর ছেড়ে মিঠা পানিতে আসে। মা ইলিশের নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বেচাকেনা, পরিবহন ও মজুদ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এ আদেশ বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করবে মৎস্য অফিস, বর্ডার গার্ড, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
গত শনিবার চারঘাটে কার্ডধারী ৫৭০ জন জেলেদের মাঝে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। সকালে উপজেলা প্রশাসন ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর আয়োজনে চারঘাট খাদ্যগুদাম চত্তরে বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আরিফ হোসেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লাহ মোল্লাহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরহাদ লতিফ, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ইয়াছিন আলী, চারঘাট খাদ্যগুদাম (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকন আলী, চারঘাট ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ও চারঘাট প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ময়েন উদ্দিন পিন্টু প্রমুখ।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লাহ মোল্লাহ বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ মাছ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞ জারি করা হয়েছে। এসময় সাগর থেকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসে।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ২২ দিন নদীতে মাছ শিকার বন্ধ। উপজেলার জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যে কোন ব্যক্তি আইন অমান্য করলে শাস্তি কম পক্ষে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে।