চালু হচ্ছে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় সঞ্চালন লাইন

আপডেট: এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ২:৪১ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


পাবনা জেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তৃতীয় সঞ্চালন লাইনটি প্রস্তুত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বগুড়ায় ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৮৯ দশমিক ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইনটি চালু করা হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবি।

পরীক্ষামূলক উদ্বোধনের পর থেকেই সঞ্চালন লাইনটি সচল থাকবে। এ কারণে পাবনা, নাটোর ও বগুড়া জেলার কিছু এলাকার জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতে বছরের শেষ নাগাদ উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। সেই আলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে সঞ্চালন লাইনগুলো।

মোট ছয়টি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে রূপপুর ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই পারমাণবিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হবে। এর মধ্যে স্থালভাগে নির্মিত তৃতীয় সঞ্চালন লাইনটি চালু হল। আর পদ্মা ও যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে ঢাকা, গোপালগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য নির্মিত সঞ্চালন লাইনও প্রায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পিজিসিবির মুখপাত্র এ বি এম বদরুদ্দোজা খান জানান, উচ্চ ভোল্টেজের কোনো নতুন বিদ্যুৎ লাইন চালুর আগে এ ধরনের সতর্কতা সব সময় দেওয়া হয়।

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী, সলিমপুর ও মুলাডুলি ইউনিয়ন; নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর, নগর, মাঝগাঁও ও বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন; গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন এবং সিংড়া উপজেলার চামারী, কলম, চৌগ্রাম ও রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে নতুন এই সঞ্চালন লাইন যাচ্ছে। এছাড়া বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নন্দীগ্রাম ও ভাটগ্রাম ইউনিয়ন এবং কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়ন এই নির্দেশনার আওতায় থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে নবনির্মিত লাইনটি সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে। এ অবস্থায় নবনির্মিত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের টাওয়ারে আরোহন, গবাদিপশু বাঁধা, টাওয়ারে রশি বেঁধে কাপড় শুকানো, লাইনের নিচে ও পাশে বাঁশঝাড় ও বড় গাছ রোপণসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে সবাইকে ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন থেকে নিরাপদ (উভয় পাশে ২৩ মিটার) দূরত্বে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। উচ্চ ভোল্টেজের এই সঞ্চালন লাইন বা টাওয়ারের সংস্পর্শে এসে কেউ বিদ্যুতায়িত হলে পিজিসিবি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

অগ্রগতি কতটা : পিজিসিবির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিটের একটি ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রিভার ক্রসিং লাইন, পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে ৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিটের ২ কিলোমিটার দীর্ঘ রিভার ক্রসিং লাইন এবং যমুন নদীর ওপর দিয়ে ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিটের ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে এসব লাইন নির্মাণ কাজের ২৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে পিজিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রিভার ক্রসিং লাইন নির্মাণের বড় বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলো আমরা অতিক্রম করেছি। এছাড়া নদী পাড়ি দেওয়ার পর যে সঞ্চালন লাইন, সেটাও নির্মাণ হয়ে আছে। এখন অল্প সময়ের মধ্যে রিভার ক্রসিং লাইনগুলো নির্মাণ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।’

মুখপাত্র বদরুদ্দোজা খান বলেন, রিভার ক্রসিং লাইনগুলোর বাইরেও স্থালভাগের ওপর তিনটি সঞ্চালন লাইন রয়েছে, যেগুলো এখন শতভাগ প্রস্তুত। এর একটি হচ্ছে ২৩০ কেভি বেকফিড লাইন, যা অনেক আগেই তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার সময় যে বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে, সেজন্য এই লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। আবার কেন্দ্র চালু হলে এই লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা যাবে। এছাড়া রূপপুর থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি পর্যন্ত একটি ২৩০ কেভি লাইন নির্মাণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ রূপপুর থেকে বগুড়ার লাইনটি নির্মাণ শেষ হল।- বিডিনিউজ

Exit mobile version