জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও এমপি আয়েনের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর || আ’লীগের দুই গ্রুপে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০১৭, ২:০৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক



রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ও সাংসদ মো. আয়েন উদ্দিনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে দলীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সংবর্ধনায় হামলা চালায় সাংসদ আয়েন উদ্দিনের কর্মী-সমর্থকরা। এর পাল্টা জবাব হিসেবে সাংসদ আয়েনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের অনুসারীরাÑ প্রতিপক্ষের অভিযোগ। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে পবার কাপাশিয়া এলাকায় নবনির্বাচিত রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ১২-১৫ জন দুর্বৃত্ত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সংর্বধনা মঞ্চের পেছন থেকে হামলা চালায়। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা ছিল। সন্ত্রাসীরা প্রথমেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে মঞ্চের পেছনের অংশের পর্দার কেটে ফেলে। এ সময় তারা মঞ্চের ডান পাশে ও সামনে থাকা অন্তত ৫০-৬০টি প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে তারা মঞ্চ ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে উপস্থিত ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে পরিস্থিতি শান্ত হলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।
মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, অনুষ্ঠানের আয়োজক মহানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ জহিরুল আলম রিপনের লোকজনের সঙ্গে এমপি আয়েনের লোকজনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া তেমন কিছুই হয়নি।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আয়েনের লোকজন হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এলাকার জনগণ তা প্রতিহত করেছে। মঞ্চে উঠে ব্যানার ছিঁড়লে লোকজন ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এর পাল্টা জবাব হিসেবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নগরীর বহরমপুর এলাকায় অবস্থিত সাংসদ আয়েনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আয়েনের অনুসারীরা অভিযোগ করেছেন, এ হামলা করেছে আসাদের অনুসারীরা। তারা বলছেন, আসাদের লোকজন এসে কার্যালয়ের ৪০টির মতো চেয়ার ভাঙচুর করেছে। বঙ্গবন্ধুর ছবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ওসি আমানুল্লাহ বলেন, হামলার চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশের কারণে হামলা করতে পারেনি। পুলিশ তা প্রতিহত করেছে। তবে কার্যালয়ের বাইরে বটগাছের নিচে থাকা চারটি চেয়ার ভাঙচুর করেছে। কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতেই পারেনি বলে জানান তিনি।
সাংসদ আয়েন বলেন, আমি মোহনপুরে আছি। শুনেছি কিছু লোকজন আমার কার্যালয়ে হামলা করার চেষ্টা করেছিল। এলাকার লোকজন তাদের প্রতিহত করেছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা চালানোর বিষয়ে সাংসদ আয়েন জানান, আমি ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলাম। জানতাম ওই অনুষ্ঠানটি ছিল জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। কিন্তু পরে শুনি ওখানে আরো কাকে যেন সংবর্ধনা দেয়া হবে। সেইজন্য আমি আর ওই অনুষ্ঠানে যাইনি। জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব না দিয়ে চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়ার কারণে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হতে পারে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ