বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যা মামলার বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তার সহকর্মীরা। গত বছরের ২৫ নভেম্বর ওই হত্যামামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। পরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। পরে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সেখানে এখনও অভিযোগপত্র গ্রহণ করেনি আদালত। এছাড়া হত্যামামলার অভিযুক্ত সব আসামি জামিনে আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ড. শফিউল হত্যার পর দুই বছর পার হলো। এই হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সমানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী যোগ দেন।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ওয়ারদাতুল আকমাম বলেন, ‘দুই বছর আগে আমরা যে দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম আজ আবারও একই দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। স্যার আর আমাদের মাঝে ফিরে আসবে না এটা ঠিক, তবে হত্যাকারীরা শাস্তি পেলে স্যারের পরিবার, সহকর্মী, শিক্ষার্থীরা একটু হলেও প্রশান্তি পাবে। আমরা দ্রুত বিচার চাই।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত এক যুগে চারটি হত্যাকা-ের একটিরও বিচার এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। তাই একসাথে সুর মিলিয়ে বলতে হবে, দ্রুত বিচার চাই, যাতে আমাদের ক্ষত একটু হলেও শুকায়।’ তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্য পরিচালনা করার দাবি জানান।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ্, সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন ও আইন বিভাগের অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান। মানববন্ধনে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে খুন হন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন। পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক বাদি হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই হত্যাকা-ের এক বছরে মাথায় ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্ত কর্মকর্তা রেজাউস সাদিক। অভিযোগপত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাসরিন আখতার রেশমার সঙ্গে শিক্ষক শফিউল ইসলামের দ্বন্দ্বের জের ধরেই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগপত্রে রাজশাহী জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, আব্দুস সামাদ পিন্টু, আরিফুল ইসলাম মানিক, সিরাজুল ইসলাম, সবুজ, আল মামুন, আরিফ, সাগর, জিন্নাত আলী, ইব্রাহিম খলিল ও নাসরিন আখতার রেশমাকে আসামি করা হয়। তারা সবাই গ্রেফতার হলেও বর্তমানে জামিনে আছেন।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আব্দুস সালাম জানান, ‘এই মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত যুবদল নেতা উজ্জ্বলসহ ১১ আসামিই উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছে। মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’ আগামী শুনানিতে অভিযোগ গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।