তানোরে হিট স্ট্রোকে আতঙ্কে আছেন পোল্ট্রি খামারিরা

আপডেট: মে ৫, ২০২৪, ১:৫৩ অপরাহ্ণ


তানোর প্রতিনিধি:


তীব্রৃ তাপদাহে রাজশাহীর তানোর উপজেলার পোল্ট্রি খামারিরা পড়েছেন বিপদে। প্রতিটি পোল্ট্রি খামারে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ টি মুরগি হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। এর ফলে চলতি মৌসূমে তানোর পোল্ট্রি খামারিদের ব্যাপক লোকসানে পড়ার আশংকা রয়েছে। তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা মো. ওয়াজেদ আলী জানান, তানোরে ১২শোর মতো পোল্ট্রি ও লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে।

এর মধ্যে দেশি মৃুরগির সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার, বয়লার মুরগির সংখ্যা প্রায় সাত হাজার এবং লেয়ার মুরগির সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে মানুষের পাশাপাশি বয়লার এবং লেয়ার মুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা মো. ওয়াজেদ আলী জানান, ০ থেকে ২১ দিনের পোল্ট্রি মৃুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে।

তালান্দ গ্রামের বিসমিল্লাহ পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্তাধিকারি ফারুক ও রতন জানান, ২২ থেকে ২৫ দিনের মুরগি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তিনি জানান, প্রতিদিন হিট স্ট্রোকে ৫০০ শেডের ফার্মের খামারে ৮ থেকে ১০টি মুরগি মারা যাচ্ছে। এ থেকে প্রতিদিন খামারির ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১৫শো টাকা থেকে ১৮শো টাকা।
উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের মাদারীপুর বাজারের পোল্ট্রি খাদ্য ও ওষুধ ব্যবসায়ী কুদরত নয়মদ্দিন জানান, সাধারণতঃ যে সমস্ত খামারে মুরগির বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন সে সমস্ত খামারের মুরগি আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। তিনি আরো জানান, হিট স্ট্রোক থেকে মুরগি রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন সকালে বায়োভেট পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। দুপুরে হাইড্রোসল লিকুইড পানির সাথে মিশিয়ে মুরগির গায়ে স্প্রে করতে হবে। তানোরের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, যে সমস্ত খামারি বেশি বেশি স্টেরয়েড জাতীয় খাদ্য খাওয়ান যে সব খামারের মুরগির হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি। তিনি জানান, খামারের মুরগি হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করার জন্য গ্লুকোজ, স্যালাইন, নিরাপদ ঠান্ডা পানি বার বার খাওয়াতে হবে; ইলেকট্রিক ফ্যানের বাতাস দিতে হবে। এ ছাড়া প্রচণ্ড তাপ থেকে রক্ষার জন্য খামারের চালের উপর চটের বস্তা দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। সাধরণত দেশের বয়লার মুরগি ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে কিন্ত কয়েক দিন ধরে কলারোয়া এলাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়ািস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠানামা করছে। একদিকে প্রচণ্ড তাপমাত্রা অন্য দিকে বিদ্যূৎ এক অব্যাহত লোডসেডিঙের কারণে খামারিদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে তানোর উপজেলার পোল্ট্রি খামারিগণকে এবারের মৌসুমে ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে। ব্যাংক, বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে লোন নেয়া এবং খাদ্য ও পোল্ট্রি ওষুধের দোকান থেকে বাকি নেয়া খামারিরা দেনার দায়ে খামার বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খামারিগণ সহজ শর্তে ঋণ ও পোল্ট্রি খাদ্য ও ওষুধের দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন তানোর উপজেলার খামারিরা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version