তোশাখানায় উপহার সামগ্রী জমার বিধান

আপডেট: মার্চ ১৫, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

আইনি বাধ্যবাধকতা প্রয়োগ করতে হবে

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপহার পেলে এসব উপহারকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব সম্পদ সাধারণ জনগণকে প্রদর্শনের জন্য তোশাখানায় জমা রাখার বিধান রয়েছে। যদিও এই ধারা কতটা প্রতিপালিত হয় তা নিয়ে নানা জনের নানা প্রশ্ন রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, তোশাখানা আইন মেনে এসব উপহার-সামগ্রী রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে অনেকেই জমা দেয় না। রাষ্ট্রীয় ব্যক্তি হিসেবে পায়া এসব উপহার তারা ব্যক্তি-গতভাবে ভোগ করে থাকেন, যা আইন-গতভাবে উচিত নয়।

রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে পাওয়া উপহারসামগ্রী তোশাখানায় জমা দেয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের লেখা একটি চিঠির সূত্র ধরে গত ১০ মার্চ আলাদাভাবে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের উপহার পাওয়া সামগ্রী তোশাখানায় জমা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তোশাখানা অর্থ এমন একটি ভাণ্ডার যেখানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের মহামূল্যবান উপহার সামগ্রী সংরক্ষিত থাকে। এসব উপহার সামগ্রীর মধ্যে আছে দেশি বা বিদেশি তৈজসপত্র, স্মারক মুদ্রা, বিভিন্ন ধরনের স্মরণিকা, মহান ব্যক্তির প্রতিকৃতি/আলোকচিত্র, শিল্পকর্ম, লোকশিল্প বা হস্তশিল্পের নমুনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ১৯৭২ সালের ৫ম মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে রাষ্ট্রীয় তোশাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। তোশাখানা পরিচালনার জন্য তোশাখানা (রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশাসন) বিধিমালা, ১৯৭৪ প্রণীত হয় এবং ২০১২ সালে এ বিধিমালা হালনাগাদ করা হয়। এবং বিধি প্রণয়ন করা হয়।

২২ আগস্ট ২০১৮ বর্তমান তোশাখানা হতে ৭২৬ টি বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী সংরক্ষণ ও সর্বসাধারণের দেখার জন্য জাদুঘরে স্থানান্তর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর নবনির্মিত রাষ্ট্রীয় তোশাখানা ভবনের উদ্বোধন করেন।

তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান। লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে শনিবার (৫ আগস্ট ২০২৩) ইমরানকে গ্রেপ্তার করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ইমরানের আবেদন গ্রহণ না করে ৩ বছরের সাজা ঘোষণা করার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে পায়া তোশাখানার সামগ্রী বেচাকেনার অভিযোগে ইমরান খানকে এ সাজা দেওয়া হয়।

যদিও বাংলাদেশে উপহার সামগ্রী ব্যক্তিগত সংরক্ষণে রাখার জন্য কোনো আইনি প্রক্রিয়ার ঘটনা জানা নেই। তবে সরকারে সংশ্লিষ্ট এমন অনেকেই আছেন যাদের বিরুদ্ধে অভেযোগ ওঠে যে, তারা প্রাপ্ত উপহার সামগ্রী তোশাখানায় জমা দেননি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়েও দেখা হয়নি। আইনি উদ্যোগ এবং একই সাথে আইনের প্রয়োগ না থাকলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও মনে হয় না। বাধ্যবাধকতা না থাকলে পরিস্থিতি তেমনই থাকবে, যেমন আছে।

Exit mobile version