‘দশম রাম’ নামে পরিচিত হবেন নয়া থাই রাজা

আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০১৬, ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক



নতুন রাজা হিসেবে দায়িত্ব নিতে থাইল্যান্ডে ফিরেছেন ক্রাউন প্রিন্স মাহা ভাজিরালংকর্ন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ‘রাজা দশম রাম’ নামে পরিচিত হবেন।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি জার্মানি থেকে দেশে ফেরেন বলে থাই সেনাবাহিনীর দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেনা কর্মকর্তা বলেন, “হিজ মেজেস্ট্রি সকালে নিরাপদে দেশে ফিরেছেন।”
থাই পার্লামেন্ট ক্রাউন প্রিন্সকে পরবর্তী রাজার দায়িত্ব নিতে আমন্ত্রণ জানাবে, এমন ঘোষণার দুইদিন পর ভাজিরালংকর্ন দেশে ফেরেন। বৃহস্পতিবার রাজপুত্র বৌদ্ধ মতবাদ অনুযায়ী তার বাবা প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের মৃত্যুর ৫০ দিনের আনুষ্ঠানিকতা সারবেন বলে জানা গেছে। এরপর সন্ধ্যায় থাই পার্লামেন্টের প্রধান পর্নপেচ উইচিতচলচাই-য়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সিংহাসনে অধিষ্ঠানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা, রাজপরিবারের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সাবেক প্রধান ও অভিভাবক প্রেম তিনসুলানন্দা এ সময় উপস্থিত থাকবেন। পরে প্রাসাদ কর্তৃপক্ষ তাদের নির্ধারিত রীতি অনুযায়ী পরবর্তী রাজার নাম আন্ষ্ঠুানিকভাবে ঘোষণা করবে। রাজা ভূমিবলের মৃত্যুর পর  ১৩ অক্টোবর থেকে থাই সিংহাসন ফাঁকা পড়ে আছে।
বাবার মৃত্যুতে শোকার্ত রাজপুত্র দায়িত্ব নিতে দেরি করতে চাওয়ায় এতদিন অনানুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন রাজপরিবারের অভিভাবক পদে থাকা ৯৬ বছর বয়সী প্রেম। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলে ভাজিলাংকর্ন হবেন ২৩৪ বছরের পুরনো চকরি সাম্রাজ্যের দশম রাজা। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি রাজা দশম রাম নামে পরিচিত হবেন।
ক্রাউন প্রিন্সের বাবা বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে রাজত্ব পরিচালনাকারী প্রয়াত রাজা ভূমিবল থাইল্যান্ডের নাগরিকদের কাছে অত্যন্ত সম্মানিত এবং অভিভাবকতুল্য ছিলেন।
১৯৪৬ সালে ভাইয়ের মৃত্যুর পর মাত্র ১৮ বছর বয়সে থাইল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন ভূমিবল। এ বছরের জুনে তার সিংহাসনের আরোহনের ৭০তম বার্ষিকী পালন করা হয়।
সিংহাসনে থাকার সাত দশকে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে বহু অস্থিরতা দেখেছেন রাজা। সেনা অভ্যুত্থানও হয়েছে, তবে রাজা বেশিরভাগ সময়েই রাজনীতির ঊর্ধ্বে ছিলেন। থাইল্যান্ডের সংবিধান অনুযায়ী রাজা রাজনীতির ঊর্ধ্বে হলেও দেশটির রাজনীতির অনেক সংকটময় পরিস্থিতিতে ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গেছে ভূমিবলকে।
ভাজিলাংকর্নের জনপ্রিয়তা তার বাবার মত নয়। ক্রাউন প্রিন্স থাকাকালীন তিনি থাইল্যান্ডের চেয়ে বিদেশে বেশি সময় কাটিয়েছেন।
থাইল্যান্ডের আইন দেশটির রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের যে কোনো ধরনের হুমকি ও অপমান থেকে রক্ষা করে। প্রাসাদের উত্তরাধিকার বিষয়ে প্রকাশ্যে যে কোনো ধরনের আলোচনা দেশটিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এদিকে বছরব্যাপী প্রয়াত রাজার শোক পালনের কারণে পার্লামেন্ট নির্বাচন পেছাবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা।
২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন জেনারেল প্রায়ুথ। এর পর ২০১৭ সালে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি জানান, প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই তার।
“রাজা ভূমিবলের মৃত্যুর কারণে বছরব্যাপী যে শোক চলছে তাতে ২০১৭-র নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। যথাসময়েই তা অনুষ্ঠিত হবে”, বলেন প্রায়ুথ।- বিডিনিউজ