সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিনিধি:
নগরীতে স্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে ১০ দিন আগে বিক্রি করা শিশু সন্তানকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে শিশুটিকে গোদাগাড়ী থেকে উদ্ধার করেছে রাজপাড়া থানা পুলিশ।
গত ১০ নভেম্বর বাচ্চাটিকে ২৪ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছিলো বাবা রহিদুল ইসলাম (৪০)। এঘটনায় রহিদুলসহ যিনি বাচ্চাটিকে কিনেছিলেন তাকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাচ্চাটি ১০ নভেম্বর জন্ম নেয়। নগরীর লক্ষ¥ীপুর এলাকার কেয়ার নার্সিং হোম নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কন্যা সন্তান প্রসব করেন জান্নাতুল খাতুন। বাচ্চাটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর জান্নাতুল খাতুনকে জানানো হয় তার বাচ্চা মারা গেছে। কিন্তু শাহানুর নামক এক ব্যক্তির কাছে সন্তান বিক্রি করে দেন রহিদুল। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে জান্নাতুল রাজপাড়া থানায় জানান। এরপর রহিদুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে গোদাগাড়ী থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে শিশুটি তার মায়ের কাছে আছে।
রহিদুল ইসলাম (৪০) পেশায় দিনমজুর। সে নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে নগরীর সিলিন্দা এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের ১০-১২ বছর বয়সী আরও একটি ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান আছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিদুল ইসলাম পুলিশকে জানিয়েছে, অভাবের তাড়নায় তিনি বাচ্চা বিক্রি করেছেন।
আর ক্রেতা শাহানুর জানিয়েছেন, তার বোনের কোনো সন্তান নেই। তাই বোনের জন্য তিনি বাচ্চাটি কেনেন। কিন্তু দত্তক নেওয়ার মতো করে কোনো কাগজপত্র করে না দেওয়ায় তিনি বাচ্চাটি নিজের কাছে রাখেন নি। তার অন্য এক আত্মীয়কে বাচ্চাটি দিয়েছেন। ওই আত্মীয়ের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে।
নগরীর রাজপাড়া থানার এসআই মাহাফুজুর রহমান জানান, পুলিশ বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে থানায় এনেছে। বাচ্চাটি সুস্থ আছে। বর্তমানে মায়ের কাছেই সন্তান আছে। আর তার বাবা একেক সময় একক রকম কথা বলছে। যার কাছে বাচ্চাটি ছিলো তাকেও থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।
রোববার (২০ নভেম্বর) বিকেলে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটিকে তার মা জান্নাতুল খাতুনের কোলে তুলে দেওয়া হয়। জান্নাতুল তখন কাঁদতে শুরু করেন। মিথ্যা কথা বলে আমার মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন রহিদুল। বাচ্চা ফেরত পেয়ে এখন আমি অনেক খুশি।
রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী জানান, বাচ্চা কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা রহিদুল, দালাল তরিকুল এবং ক্রেতা বিউটিকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হবে। বাচ্চার মা মামলার বাদী হবেন। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বাচ্চাটি মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে।