নাটোরে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ ঘটনায় বিশ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ২

আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৪, ২:২৩ অপরাহ্ণ

নাটোর প্রতিনিধি :


নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার ভাইকে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে থেকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে সিংড়া উপজেলার সেরকোল এলাকায় অভিযান চালিয়ে রানীনগর সুইজগেট নামক স্থান থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে আ. সামাদের ছেলে সুমন আহমেদ (৩০) এবং শেরকোল ইউনিয়নের হারোবাড়িয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হক বাবু (৩২)।

অপরদিকে মঙ্গলবার (১৬ এপ্লিল) দিনগত রাত ১২:৩০ টার দিকে অপহৃতের ভাই মজিবুর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার কর্মকর্তা ওসি মো. মিজানুর রহমান।

আহত দেলোয়ার হোসেনের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের শ্যালক লুৎফুল হাবীব রুবেল। রোববার পর্যন্ত তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। কিন্তু সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য দেলোয়ার হোসেন ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বের হন।

এ সময় তারা জরুরি প্রয়োজনে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক রুবেলের হুকুমে সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হাসান মোহনসহ ১৫-২০ জন দুবৃত্তরা আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে নেমে আসলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে নেয়।

এ সময় তারা তাকে গাড়ির ভিতর মারধর করে। পরে বিকেলে দেলোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে (সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পারসাঐল গ্রাম) সামনে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেনকে অচেতন অবস্থায় পরিবারের লোকজন প্রথমে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসক। সন্ধ্যায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে রাত ২টার দিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে আইসিইউতে নেয়া হয়।

মামলাল তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই জামাল) জানান, ঘটনার পর থেকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতারকৃত নাজমুল আর সুমনের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে শেরকোল সুইসগেট নামক স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সিংড়া থানার অফিসার ইনজার্চ ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, গতরাতে দেলোয়ার হোসেনের ভাই মজিবুর রহমান থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ এ ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

আহত অবস্থায় দেলোয়ার হোসেনকে তার বাড়ির সামনে ফেলে গেলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে এমন অভিযোগ পাওয়ার থেকে পুলিশ দুর্বৃত্তদের অবস্থান শনাক্তের কাজ শুরু করে। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা এবং ভিকটিমের পরিবারে আর্জিমোতাবেক বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার এ রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।

Exit mobile version