নাসরাল্লাহর সম্ভাব্য ২ উত্তরসূরিকে হত্যার দাবি নেতানিয়াহুর

আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ণ

লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ। ছবি: রয়টার্স

সোনার দেশ ডেস্ক :


লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ’র প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার পর, তার সম্ভাব্য দুই উত্তরসূরীকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) একটি ভিডিও বার্তায় এমন দাবি করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে নিহত ওই দুই নেতার নাম প্রকাশ করেননি তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর ওপর স্থল হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে দক্ষিণ লেবাননে একটি চতুর্থ সেনা ডিভিশনও মোতায়েন করেছে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ’র সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যাকাণ্ডের পর গোষ্ঠীটির ডেপুটি লিডার আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির দরজা খোলা রাখেন। তার এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই নেতানিয়াহুর কার্যালয় তার একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করে।

ভিডিওটিতে নেতানিয়াহু সম্ভাব্য উত্তরসূরীদের নাম উচ্চারণ না করেই বলেন, ‘আমরা হিজবুল্লাহ’র সক্ষমতা ক্ষুণ্ন করেছি। আমরা নাসরাল্লাহকে এবং নাসরাল্লাহর বিকল্প ও তারও বিকল্প নেতাসহ হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে শেষ করে দিয়েছি।’

নাসরাল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন সিনিয়র নেতা হাশেম সাফিয়েদ্দীন। একইদিন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, নাসরাল্লাহকে স্থলাভিষিক্ত করার প্রত্যাশিত ব্যক্তি হাশেম সাফিউদ্দীনকে সম্ভবত ‘শেষ’ করা হয়েছে। নেতানিয়াহু ‘বিকল্পের বিকল্প’ বলতে কাকে বোঝাতে চেয়েছিলেন তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

পরে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, গত সপ্তাহে বোমা হামলা চালানোর সময়ও ইসরায়েল জানত সাফিউদ্দীন হিজবুল্লাহ’র গোয়েন্দা সদর দফতরে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সাফিউদ্দীনের অবস্থা ‘পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং আমরা যখন কিছু জানব, তা আমরা জনসাধারণকে জানাব।’

সেই বিমান হামলার পর থেকে সাফিউদ্দীনকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রক্সি বাহিনীর সবচেয়ে শক্তিশালী সশস্ত্র ও গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সমর্থনে কাজ করছে এই গোষ্ঠীটি।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘বহু বহু বছরের মধ্যে হিজবুল্লাহ আজ সবচেয়ে দুর্বল।’
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার বলেছে, দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ স্থাপনাগুলোতে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বিমান হামলায় ছয় সেক্টর কমান্ডার ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫০ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

এক বছর আগে, দক্ষিণ ইসরায়েলের গাজার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণের জেরে উদ্ভূত আঞ্চলিক উত্তেজনা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে লেবাননকে যেন গ্রাস করে ফেলছে।

১ অক্টোবর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হিজবুল্লাহ ও হামাস উভয়ের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র ইরান। মঙ্গলবার ইসরায়েলকে প্রতিশোধমূলক হামলা না করতে সতর্কও করেছে দেশটি।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ইরানের অবকাঠামোতে যে কোনও ধরণের হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। একজন সিনিয়র ইরানি কর্মকর্তা উপসাগরীয় দেশগুলোর উদ্দেশে বলেছিলেন, এই ধরণের হামলা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ এবং তারা যদি ইসরায়েলকে তাদের আকাশসীমা ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের অনুমতি দেয় তবে এর প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ হবে।

এই সংঘাত বৃহত্তর তেল উৎপাদনকারী মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করতে পারে এই ভয়ে পশ্চিমা শক্তিগুলো এর একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজছে।
মঙ্গলবার পেন্টাগন ঘোষণা করেছে, গ্যালান্ট ওয়াশিংটন সফর ও মার্কিন প্রতিপক্ষ লয়েড অস্টিনের সঙ্গে তার বুধবারের পরিকল্পিত বৈঠকে নিয়ে কাজ করবেন না।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ