ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পত্নীতলা (নওগাঁ):
নওগাঁর পত্নীতলায় আবহমানকাল ধরেই পুরুষের চেয়ে নারীর মজুরি প্রায় অর্ধেক। পুরুষের কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে এখনকার নারী শ্রমিকেরা পুরুষের সমান শ্রম বিক্রি করে। অথচ সমান কাজ করেও নারীরা পুরুষের তুলনায় প্রায় অর্ধেক মজুরি পায়। একবিংশ শতাব্দিতেও এই দৃশ্য বড়ই হৃদয় বিদারক! নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মানবতার জননী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যখন উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ঠিক তখনি নারীদের অর্ধেক মজুরি দিয়ে ইটভাটা, ধান রোপণ, রাজমিষ্ট্রির জোগালি ও অন্যান্য কাজে পুরুষের সমান কাজ করেও নারী হওয়ার অপরাধে তারা অর্ধেক মজুরি পায়। ইহা কোন মতেই কাম্য নহে।
স্থানীয় এলাকার কয়েকজন আদিবাসী নারী শ্রমিকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, “হামরা বেটিছল হয়ে জন্ম নিচি। বিয়া হওয়ার আগে শাসন করতো বাপ-ভাইরা। বিয়া হওয়ার পরে শাসন করে স্বামী-দেবররা। হামরা বেটিছল হয়ে জন্মাচি, এটাই হাংকেরে বড় পাপ! তোরা যদি দয়া করে পেপরের কাগোজোত লিকিশ, তালে হয়তো হাংকেরে কিচুটা হলিও উপগার হবি।”
এ বিষয়ে উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের দিঘীপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আজিজার রহমান জানান, ‘মেয়েরা যতোই বড়াই করুক, তারা পুরুষের সমান কাজ করতে পারে না। তাই মজুরি কম। এই নিয়ে আফসোস করার কিছুই নেই।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের আজীবন সদস্য ইউনুছার রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা মঞ্চ কাঁপিয়ে হাত-পা ছুড়িয়ে বড়ো-বড়ো বুলি আওড়ান। অথচ, বাস্তবে তাঁদেরকে কোন টেকসই ভূমিকা গ্রহণে আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় না। বরং, তাদের ইটভাটায় কিংবা চাউল কলে নারীরা পুরুষের সমান কাজ করেও তাদের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মজুরি পান। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক!’’