শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
যুদ্ধ বিরতি সময়ের দাবি
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যেকার যুদ্ধ পরিস্থিতি মারত্মক পরিণতির দিকে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। যুদ্ধরত পক্ষদ্বয় যদি ধরেই নেয় যে, যুদ্ধ অনিবার্য- তা যে ভয়াবহ কিছুর ইঙ্গিত দেয় তা বলাই বাহুল্য। উভয় পক্ষে যখন দেশ সমূহের যুদ্ধ সমর্থন গড়ে ওঠে তখন যুদ্ধাবসনের আশাটাও বেশ ক্ষীণ হয়ে আসে। ইসরাইল- হামাস যুদ্ধের ক্ষেত্রে তেমনই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু এই যুদ্ধর শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ইসরাইল কর্তৃক গাজায় মুহুর্মুহ বিমান হামলায় সেখানের নারী ও শিশুরা চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সেখানে মানবিক সঙ্কট খুবই গভীর হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবার দেয়া তথ্য অনযায়ী ইসরাইল কর্তৃক বিমান হামলায় ৮ দিনে ৭২৪ জন শিশুসহ এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৪ জন।
মৃত্যু বোমা শুধু আকাশ থেকেই ঝরে পড়ছে না। ইসরাইল প্রায় পুরো ফিলিস্তিন ঘিরে ফেলেছে। গাজায় বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সেখানের অধিবাসীরা। ইসরাইল গাজা থেকে অধিবাসীদের সরে যাওয়ার জন্য সময় বেধে দিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রচারপত্রও বিলি করা হয়েছে। অন্যদিকে হামাস গাজার অধিবাসীরা গাজা ত্যাগ না করার জন্য অধিবাসীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ গাজার অধিবাসীরা উভয় সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। শনিবার এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ-এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে গাজা উপত্যকায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই। অনেক বেসামরিক মানুষ হাসপাতাল ও স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক স্কুল বোমার আঘাতে ধ্বংসও হয়ে গেছে।’ এই পরিস্থিতিতে ইউনিসেফ গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে।
এখন এটাই একমাত্র প্রত্যাশিত যে, একটা যুদ্ধবিরতি হোক- যাতে করে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা হবে। যুদ্ধ বিরতি রাশিয়াও চেয়েছে। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে ভোট চেয়েছে রাশিয়া। কিন্তু ইসরাইল ও হামাসের যুদ্ধ সাজ সাজ অবস্থায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আশান্বিত হওয়া যাচ্ছে না। বরং এও আশংকা করা হচ্ছে যে, ইসরাইল- হামাসের যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত অন্যান্য দেশের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। এ ব্যাপোরে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো যারা ইসরাইলকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন-সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এই মানসিকতাও বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। মানবিক বিপর্যয়ে একপেশে সমর্থন সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। তারাই ইসরাইলে অতি বাড়াবাড়িকে ক্ষান্ত করতে পারে এবং এই মুহূর্তে সেটাই প্রত্যাশিত। ইউনিসেসেফ-এর অনিতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি বৈশ্বিক কল্যাণের জন্য, ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুদের হতাযজ্ঞ বন্ধে সেটা আরো বেশি প্রত্যাশিত।