ফেসবুক বন্ধুকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ || দুইজন কারাগারে : ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন

আপডেট: আগস্ট ৩, ২০১৭, ১:২৩ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


নগরীতে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পাস করা ওই ছাত্রীকে  নগরীর নওদাপাড়া এলাকার একটি বাগান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীর এক ফেসবুক বন্ধুসহ দুইজন ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষকসহ দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর তাদেরকে গতকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষিত ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ধর্ষিত ছাত্রীকে নিজ জিম্মায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শাহমুখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (ইউআইটিএস) এর রাজশাহী শাখার সাবেক শিক্ষক সামশুল আলম বাদশা ও রাজশাহীর গৌরহাঙ্গা এলাকার ইজিটাস কম্পিউটার দোকানের মালিক আবু ফায়েজ নাহিদ। এদের মধ্যে বাদশার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মচমইল এবং নাহিদের বাড়ি একই উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে। তারা দুইজনেই রাজশাহী শহরের বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। আনোয়ার হোসেন তুহিন (ওসি, তদস্ত) জানান, ধর্ষণের শিকার বিশ^বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পাস করে বের হয়ে চাকরির চেষ্টা করছিলেন তিনি। সাবেক শিক্ষক বাদশার সঙ্গে তার ফেসবুকে পরিচয় হয়। চিকিৎসার জন্য ওই ছাত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নগরীতে আসেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য ৩১ জুলাই সকালে ট্রেনযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নগরীতে আসেন ওই বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রী। রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা শেষে দুপুরে ফোন দেন তার ফেসবুক বন্ধু বাদশাকে। এসময় বাদশা তাকে ডেকে নেয় নগরের গৌরহাঙ্গা এলাকায় তার বন্ধুর  ইজিটাস কম্পিউটারের দোকানে। ওই ছাত্রী তার কম্পিউটারের দোকানে গেলে বাদশা তার বান্ধবী হিসেবে নাহিদের সঙ্গে পরিচয় করে দেয়। এরপর দুপুরে খাবারের কথা বলে নগরের শাহমুখদুম থানার নওদাপাড়া এলাকার গ্রিন গার্ডেন নামের একটি বাগান বাড়িতে (গেস্ট হাউজ) নিয়ে যায় ওই ছাত্রীকে। সেখানে একটি কক্ষে রেখে প্রথমে বাদশা ও পরে নাহিদ ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এরপর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই ছাত্রীকে হোটেলে ফেলে রেখে চলে যায় বাদশা ও নাহিদ। এরপর হোটেল কর্মচারিদের সহযোগিতায় রাত ৮টার দিকে শাহমুখদুম থানায় নিয়ে ঘটনাটি জানায়। পরে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে রাতেই অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরপর গৌরহাঙ্গা এলাকা থেকে পুলিশ বাদশা ও নাহিদকে গ্রেফতার করে।
ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন : ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসেস সেন্টারে (ওসিসি) ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন শাহমুখদুম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন।
তিনি বলেন, সকালে শাহমুখদুম থানার ভিকটিম সাপর্ট সেন্টার থেকে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। বিকেলে আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরো জানান, এই ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সামশুল আলম বাদশা ও আবু ফায়েজ নাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয়া হবে। আজ বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করে পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
ধর্ষিত ছাত্রী নিজ জিম্মায় : ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে তরুণীকে নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে রাজশাহীর মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ওই ছাত্রীকে হাজির করা হয়। পরে আদালত ওই ছাত্রী  প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। গতকাল সকালে রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসেস সেন্টারে (ওসিসি) তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন শাহমুখদুম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তুহিন।
তিনি বলেন, সকালে শাহমুখদুম থানার ভিকটিম সাপর্ট সেন্টার থেকে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ