বই পড়ে পুরস্কার পেল রাজশাহীর ২২১২ শিক্ষার্থী II উন্নত ও সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম : বিভাগীয় কমিশনার

আপডেট: মে ১০, ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:


বই পড়ার জন্য রাজশাহীর ২ হাজার ২১২ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার দিয়েছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। শুক্রবার (১০ মে ) জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্বাগত পুরস্কার, শুভেচ্ছা পুরস্কার, অভিনন্দন পুরস্কার ও সেরা পাঠক পুরস্কার শিরোনামে চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়।

গত বছর রাজশাহী নগরীর ৫১টি স্কুলের প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ২ হাজার ২১২ জন শিক্ষার্থী মূল্যায়ন পর্বে কৃতিত্বের পরিচয় দেয়। তাদেরই উৎসবে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৬০ জন মঞ্চ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে। আর ৫৫২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক পুরস্কার গ্রহণ করেন।

উৎসবে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ৭৫৫ জন। এ ছাড়া ৫৭৫ জন শুভেচ্ছা পুরস্কার, ৭২৬ জন অভিনন্দন পুরস্কার এবং ১৫৬ জন সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে।
সেরা পাঠক বিজয়ীদের মাঝে লটারির মাধ্যমে প্রতি ১০ জনে একটি হিসেবে মোট ১৫টি বিশেষ পুরস্কারও দেয়া হয়েছে। বিশেষ পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয় ১০টি বইয়ের একটি করে সেট। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণ উৎসবে ১ম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয়-কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বিগত ৪৫ বছর ধরে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের নেতৃত্বে সারা দেশে বইপড়া আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিয়েছে। বই পড়ার মাধ্যমে অনেক কিছু জানা যায়। উন্নত ও সুশৃঙ্খল জাতি গঠনে বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম।’ তিনি সবাইকে বইপড়ার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া, বিশিষ্ট অভিনেতা, লেখক, ও অনুবাদক খায়রুল আলম সবুজ, গ্রামীণফোনের সার্কেল মার্কেটিং হেড মো. শাহিনুর রহমান এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন। অন্যান্য পর্বে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নাটোর শাখার সংগঠক অধ্যাপক অলোক মৈত্র, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক জুলফিকার মতিন, লেখক, উপন্যাসিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের-অধ্যাপক শহীদ ইকবাল, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, বিশ্ব-পরিব্রাজক ও লেখক তারেক অণু এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের জেলা-সভাপতি ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের রাজশাহী শাখার সাবেক-সংগঠক আহমেদ সফিউদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন বলেন, বই মানুষের মনঃস্তাত্ত্বিক বিকাশে সহায়তা করে। বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে জীবনে সার্বিক উন্নয়ন অনেকটাই সহজতর হয়, সেজন্য তিনি বেশি বেশি বই পড়তে শিক্ষার্থীদের আহবান জানান।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, একটি দেশের জাতি সত্ত্বা নিমার্ণ করার জন্য বই পড়ার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বই পড়ার গুরুত্ব আমরা সবাই যদি অনুধাবন করি তাহলে আগামীতে আমাদের সন্তানরা নৈতিক ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ বলেন, পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বই পড়ে চিন্তার জায়গায় সৎ হবার পরামর্শ দেন কারণ আলোকিত মানুষ হতে হলে সৎ হবার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান।

গ্রামীণফোনের সার্কেল মার্কেটিং হেড শাহিনুর রহমান বলেন, তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। তাই গ্রামীণফোন সবসময়ই তরুণদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগী। এরই ধারাবাহিকতায় বই পড়ার সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এমন মহতী উদ্যোগের সাথে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি আরও বলেন, সবার মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে এবং বই পড়াকে আরও সহজ করে তুলতে গ্রামীণফোন ‘মাইজিপি’ অ্যাপের ‘বইমেলা’-এর মাধ্যমে সবার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে পছন্দের সব বই। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, বই পড়ার অভ্যাস সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে আলোকিত মানুষ গড়া।’ এই উৎসব আয়োজন ও পুরস্কারের বই স্পনসর করে গ্রামীণফোন লিমিটেড।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version